দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকায় নাজেহাল মধ্যবিত্ত ও নিম্নরা । টিকে থাকার লড়াইয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন এদেশের খেটে খাওয়া ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী।বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তথ্য বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য, জ্বালানি ও সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েগেছে। ২০১৯ সালের তুলনায় দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে ৩ শতাংশেরও বেশি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ শতাংশ।
গত ২৭ জুলাই এক সেমিনারে উপস্থাপিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি এবং আয় কমে যাওয়ায় বর্তমানে বড় দুটি ধাক্কার মধ্যে রয়েছে মানুষ। সব শ্রেণির মানুষ বা পরিবারের ওপর এ প্রভাব পড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ ও দরিদ্র পরিবারগুলোতে। এসব পরিবারের আয়ের বড় অংশ খরচ হয় চাল, গমের মতো খাবারের পেছনে। পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় দেশের সব মানুষ কেনাকাটা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দিয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে মানুষের কেনাকাটা বা ব্যয়ের পরিমাণ কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। এর মধ্যে শহরে কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ এবং গ্রামে ৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যা ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সরকার খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির যে হার প্রকাশ করেছে, বাজারে পণ্যমূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার অনেকখানি ফারাক রয়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মানুষদের সুরক্ষা দিতে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অপর্যাপ্ত। আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এ পরিস্থিতিতে অর্থের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রানীতি কার্যকর করারও পরামর্শ দেন তিনি।