ফিয়েচার

দিন দিন মৃত্যুঝুঁকি বাড়াচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার

সাম্প্রতিক সংবাদ
ইমন চৌধুরী
Sponsored

আ্যন্টিবায়োটিক এর অপব্যবহারের ফলে জীবাণূ এখন নিজেই প্রতিরোধী হয়ে উঠছে, দিন দিন মৃত্যুঝুঁকি বাড়াচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার। ছোট থেকে বড় সবার শরীরেই জীবাণূ এখন আ্যন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এই বিষয়টা বড়ই উদ্বেগজনক বলেছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া আ্যন্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধের আইন থাকলে মানছেনা তা কেউই। আইন অনুযায়ী যতদিন না অষুধ বিক্রি হবে ততদিন এই সমস্যা আরো দীর্ঘ হবে। এক্ষেত্রে চরম ব্যর্থ দেশের স্বাস্থ্য প্রশাসন। এন্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহার অব্যাহত থাকলে তা বয়ে আনবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি না করার ব্যাপারে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগে বিভিন্ন সময়ে গবেষণা করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, বাজারজাতকৃত এন্টিবায়োটিকের মধ্যে ১১টি সর্বাধিক ব্যবহৃত। এরমধ্যে ৫টি জীবাণু কর্তৃক প্রতিরোধী-যেটাকে বলা হয় রেজিস্টেন্স। এই জীবাণু প্রতিরোধীর কারণে রোগীদের মধ্যে ৩৪ ভাগ ভালো হয় না। কোন কোন ক্ষেত্রে ৭২ ভাগ ভালো হয় না। কারণ শরীরে এন্টিবায়োটিক ওষুধের কার্যকারিতা ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ডাক্তাররা ইচ্ছামতো এন্টিবায়োটিক ওষুধ লিখছেন। অথচ কোন এন্টিবায়োটিক ওষুধটি প্রয়োজন সেটিও বিবেচনা করা হচ্ছে না। এতে জীবাণু প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। আবার রোগীরা চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক সেবনও করছেন না। দুই/তিন দিন খাওয়ার পর শরীরে ভালো অনুভব করলে আর এন্টিবায়োটিক খান না। তখন শরীরে জীবাণু থেকে যায়। পরবর্তীতে আবার এন্টিবায়োটিক খেলেও জীবাণু প্রতিরোধী হয়ে উঠে। তখন আর এন্টিবায়োটিক খেলেও রোগী সুস্হ হয় না। এক শ্রেণীর রোগী এন্টিবায়োটিকের দাম বেশি বলে কিছুদিন খেয়েই কোর্স কমপ্লিট না করেই বন্ধ করে দেন।

গবেষণায় আবার দেখা গেছে, চিকিৎসক ব্যবস্হাপত্রে দিয়েছে ৫০০ এমজি এন্টিবায়োটিক। কিন্তু ওষুধে আছে ২০০ বা ১০০ এমজি। এতে জীবানু ভয়ঙ্কর প্রতিরোধী হয়ে গেছে। আবার হাঁস-মুরগি-গরুসহ বিভিন্ন পশুর খামামিরা ব্যবহার করছে মানুষের জন্য ব্যবহূত এন্টিবায়োটিক। পশুদের জন্য এনিমেল এন্টিবায়োটিক আছে। কিন্তু তা বেশিরভাগ খামারিরা ব্যবহার করেন না। তারা মানুষের জন্য ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করার কারণে এসব হাঁস-মুরগি-মাছ-গরুর মাংস খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের শরীরে স্বল্প পরিসরে এন্টিবায়োটিক চলে যায়। কারণ এটা রান্নায়ও নষ্ট হয় না, পানিতে ধুলেও থেকে যায়। মানুষ যখন অসুস্থ হয় তখন মানব দেহের ওই এন্টিবায়োটিক খেলে কোন কাজ হয় না। কারণ জীবাণু আগে থেকেই সেই এন্টিবায়োটিককে চিনে গেছে। তাই কাজ হয় না। এসব কারণে জীবাণু ভয়ঙ্কর প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, একেকটি হাসপাতালে একেকটি নিজস্ব পলিসি লেভেল থাকে। যেমন কিডনি ইন্সটিটিউট নিজেরা কালচার পরীক্ষা করে দেখবে যে, রোগীকে কোন এনটিবায়োটিক দেয়া যায়। একইভাবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জিক্যাল বিভাগ এই ধরনের পরীক্ষা করে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে। এটা নিজস্ব পলিসিগত বিষয়। আরেকটি হলো এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমে কম ডোজ, আস্তে আস্তে হাই ডোজে যেতে হবে। সাধারণত বেশিরভাগ এন্টিবায়োটিক দেয় মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা। সেটার একটা আইনগত দিক থাকা উচিত।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, দেশে যত্রতত্র এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার হচ্ছে। এক শ্রেণীর চিকিৎসক জেনে-না জেনে কিংবা কোম্পানিকে খুশি করতে এন্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশনে লিখছেন। আবার ব্যবসার স্বার্থে প্রেসক্রিপশন ছাড়া দেদারসে এন্টিবায়োটিক বিক্রি করছে ফার্মেসিগুলো। আবার এক শ্রেণীর মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিজেরা এন্টিবায়োটিক খাচ্ছে। তিনি বলেন, কোন রোগীকে কী ধরনের এন্টিবায়োটিক দিতে হবে সেটা ভালোভাবে দেখতে হবে। এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কঠোর নজরদারি থাকতে হবে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে যৌথভাবে কাজ করছে। মানুষ যাতে এন্টিবায়োটিকের পুরো কোর্স সম্পন্ন করে সেই ব্যাপারেও সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া যাতে কেউ এন্টিবায়োটিক বিক্রি না করে সেই ব্যাপারেও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ওষুধ ক্রয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে মডেল ফার্মেসিও চালু করা হয়েছে। দেশব্যাপী এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারে জনসচেনতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক প্রচার অভিযান অব্যাহত আছে। নিম্নমানের ওষুধ তৈরি করলে টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তা ধরা

Sponsored
Leave a Comment

সর্বশেষ

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…

September 21, 2024

২০২৩ এর সফল ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাইমন সাদিক

সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…

March 4, 2024

ডিআর কঙ্গোতে শান্তিরক্ষী মিশনে  সেনাবাহিনীর ‘আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ মোতায়েন

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…

March 3, 2024

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…

January 12, 2024

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…

January 10, 2024

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…

January 7, 2024
Sponsored