জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে এই আদেশ দেন।
তবে আবেদনকারী যদি চান তাকে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দেয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আজ সকালে খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল প্রতিবেদন উপস্থাপনের মধ্যদিয়ে জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়।আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনের আলোকে খালেদার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের বিষয়টি শুনানিতে উঠে আসে। এরপর মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে জামিনের আবেদন জানিয়ে তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন শুনানিতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মাই লর্ড, যে পাকিস্তানকে আমার বর্বর দেশ বলে জানি সেই পাকিস্তানের উচ্চ আদালতই মেডিকেল গ্রাউন্ডে সে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জামিন দিয়েছে। এমনকি জামিনে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন পাঠিয়েছে। তাই আমারাই আপনাদের কাছে মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়ার জামিন চাইতে পারি।
খালেদার এই আইনজীবী আরো বলেন, ‘মাই লর্ড, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা এমন যে, তার শরীরে মেডিসিন পুশ করা যাচ্ছে না। এভাবে আর ছয় মাস পর হয়ত সে লাশ হয়ে বের হবে। তাই আমরা মানবিক বিবেচনায় জামিনের জন্য আপনাদের কাছে এসেছি। উপরে আল্লাহ ছাড়া আর আপনারা ছাড়া আমাদের তো যাবার আর কোনো জায়গা নেই, তাই বারবার আপনাদের কাছে আসি। আপনারা ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্তকেও জামিন দিয়েছেন। আপনাদের এই আদালতেরই সিদ্ধান্ত আছে নারী ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে জামিন বিবেচনা করার। উনি অসুস্থ, হাঁটাচলা করতে পারেন না। উনি তো আর পালিয়ে যাবেন না। তাই ওনাকে মানবিক বিবেচনায় জামিন দেয়া হোক।’
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জামিন আবেদনের বিরোধীতা করে বলেন, ‘ওনার প্রপার ট্রিটমেন্ট চলছে। এরপর দুদকের আইনজীবীও তার শুনানিতে জামিনের বিরোধীতা করেন।
এর আগে বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খালেদা জিয়ার সাস্থগত মেডিকেল প্রদিবেদন সুপ্রিম কোর্টে এসে পৌঁছায়।
আজকের আলোচিত এই জামিন আবেদনের শুনানিতে দুইপক্ষের ৩০ জন করে মোট ৬০ জন আইনজীবীকে আদালত কক্ষে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে শুনানির সময় আদালতে দুই পক্ষের শত শত আইনজীবীকে দেখা যায়।