নাদিম, খুবি প্রতিনিধি: পৃথিবী নামক গ্রোহে করোনার কালো মেঘে যখন দিগবিদিক মেঘাচ্ছন্ন, তখন মানুষ দিসেহারা মৃগের ন্যায় সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনারত।কবে কাটবে এই ঘুটঘুটে অন্ধকার।বর্তমান সময়ে করোনার ভয়াবহতা দেখছে সমগ্র বিশ্ব।করোনার হিংস্র থাবা থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও নিরাপদ রাখার জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিরতি।গত ১৬মার্চ থেকে আজ অবধি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ।
দীর্ঘ এই বিরতিতে ২০৬ একরের দুরন্ত ও চঞ্চল চরিত্র গুলো কি ভাবে অতিবাহিত করছে এই নিরামিষ লকডাওন?আবদ্ধ জীর্ণ জীবনের অনুভূতিই বা কেমন? সেই সম্পর্কে একটা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নানা মতামত। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ্য শিক্ষার্থীদের মতামত বিরাজমান।
মেজবাউল আলম তোহা।
১৭ব্যাচ।
সসমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এ যেন ক্লান্ত মুসাফিরের দীর্ঘশ্বাস। সে জানেনা আর কত পথ পাড়ি দিয়ে দিলে সামান্য কিছু জল মিলবে পিপাসা নিবারনের জন্য। ঠিক তেমনই এই অনির্দিষ্ট ছুটি কবে শেষ হবে,আর সেই দিনটির প্রতিক্ষায় আমি আছি।প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনে হয়ত এই একই প্রশ্ন। এক ঘেয়েমিতাই জীবন যেন রুশ্ঠ শাহারার উত্তপ্ত বালু রাশি হয়ে উঠেছে। কবে তার বদনে এক পশলা বৃষ্টি তার হৃিদয় কে শান্তি দিতে পারে।ঠিক তেমনি আমি আমার প্রিয় ক্যাম্পাস এর প্রতিক্ষায় আছি আপন হৃিদয়কে শান্তির নিঃশ্বাস দেওয়ার জন্য।বারংবার প্রিয় ক্যাম্পাস আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে।কবে তার বুকে আবার ফিরে যেতে পারবো।প্রিয় মানুষ গুলোর সঙ্গে হলের ক্যানটিনে এক সাথে খাবার খাওয়া। এক সাথে ক্লাস। পকেটে টাকা না থাকা স্বত্বেও ববন্ধুদের মায়া ভরা চোখের চাহনিতে ৭নং ঘাট,রুপসা ব্রিজ ঘুরতে যাওয়া।এক সাথে বিকেলে খাজার মাঠে খেলা করা,খেলায় বন্ধুদে সাথে অভিমান করে হলে ফেরা।আবার তখনি তাদের ফোনে শাড়া দিয়ে তপনে চায়ের চমুক।গিটার, উকুলেলে হাতে পলাশে উদ্যমে গান।মোধ্য রাতে গার্ড এর চোখ ফাকি দিয়ে অপারাজিতা, বঙ্গমাতা হলের সামনে থেকে ডাবচুরি, হলের সামনে দুষ্টুমি।ক্লাসের ফাঁকে ক্যাফেটেরিয়াতে আড্ডা,প্রিয় ভলিবল টুর্নামেন্টের।আজ যেন রুপকথার সেই আলাদীনের জিনির মতন। সেই দুরন্ত, চঞ্চল মুখ আজ করোনার ভয়ে গৃহবন্দী। জীর্ণ প্রতিটি প্রহর আমার নিকট মৃয়মান।
এই ছুটিতে আমার পরিবারের সাথেই সময় কাটছে। সময় যেন হেমন্তের সাদা মেঘ যেতেই চাই না। অধিকাংশ সময় আমি অনলাইনে আর্টিকেল পড়ি,আর নিজে শিখি কিভাবে গবেষনা করতে হয়।আর ফেসবুক ইউটিউব এবং ঘুম এই তো আমার বিরক্তিকর কোরেনটাইন।আশা করবো এই কালমেঘ যেন শিগগিরই কেটে যাই।সবাই যেন সুন্থ থাকে।
দৃষ্টি বিশ্বাস।
১৮ব্যাচ।
গণিত ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এ যেন গোলাবারুদহিন যুদ্ধের দামামাই স্তব্ধ সমগ্র বিশ্ব।যেখানে পৃথিবীর মানুষ নিরব চরিত্র মাত্র। আর আমি সেই চরিত্রের বাইরের কেউ নয়।চারিদিক মহাশ্মশানের মতই স্তব্ধ। দিবস-রজনী মহাকাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার এই মহামারীতে জীবন যাপ্ন যেন যুদ্ধক্ষেত্রের মতই। তদুপরি তারচেয়ে কঠিন থেকে কঠিনতর হিসেবেই ধাবমান।
নেই সেই প্রিয় ক্যাম্পাসে দৈনন্দিনতা, নেই সেই অ্যাসাইনমেন্ট প্রেজেন্টেশনের নির্ঘুম রাত। আজ সেই নির্ঘুম রাত কালের ধারাবাহিকতায় বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠি।ক্যাম্পাস ছাড়া নিজেকে জড়বস্তুর মতো মনে হয়। আড্ডা গান কলাহল যুক্ত ক্যাফেটেরিয়া, উৎসবমুখর মুক্তমঞ্চ, তপনদা এর চায়ের দোকান, ইব্রাহিম এ বসে চায়ের আড্ডা। বন্ধুদের অনুপস্থিতিতে নিজেকে ডানা ভাঙ্গা পাখির মত লাগতে শুরু করেছে। সবকিছু যেন তার স্বতন্ত্র রঙ হারিয়ে বর্ণিল হয়ে গেছে। এই ম্রিয়মান ছুটিতে সিংহভাগ সময় ফেসবুক টুইটার ইনস্টাগ্রাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি অতিবাহিত করি।প্রিয় মানুষগুলোর ভালো খারাপ অবস্থা জানতে চেষ্টা করি।।এক সময় আমি ছোটগল্প, নাটক উপন্যাস পড়তে অনেক ভালবাসতাম কিন্তু কালের গহবরে সে ভালোবাসা আজ বিলীন হয়ে গেছে।তবে এতোটুকু ইচ্ছা পোষণ করতেই পারি করোনার এই মহামারী হতে যেন অতি দ্রুত মুক্তি পেতে পারে বিশ্ববাসি। আবার যেন প্রিয় মানুষগুলোর সাথে মুক্ত বিহঙ্গের মত খুবির এর ক্যাম্পাসে বিচরন করতে পারি। শেষমেষ আমার একটাই কথা আবার সুস্থ হয়ে ওঠো পৃথিবী আমাকে ক্যাম্পাসে ফিরতে হবে।
রাইফুল আমিন মিঞা।
২০ ব্যাচ।
সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
বন্ধুবান্ধব যেন হৃদয়ের আরেক স্পন্দনের নাম। জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার ও বটে।করোনার কারণে যখন সমগ্র পৃথিবী স্থবির তখন বাসায় বসে বন্ধু-বান্ধবের স্মৃতিচারণ করায় এখন আমার একান্ত কর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই ল্যাপটপে ক্যাম্পাসের প্রথম দিনের বন্ধু-বান্ধবের ছবি ক্যাম্পাসের প্রথম বসার জায়গা প্রভৃতি দেখে হৃদয়ের বেদনায় ভরে ওঠে।নতুন ক্যাম্পাস নতুন সহপাঠীদের অভাব বুঝতে পারছি। মানব জীবনের ট্রেন যেন আজ তার শেষ জংশন এসে পৌঁছেছে। মহামারী এই করোনার থাবা মুছে দিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাহল। জীবন হয়ে পড়েছে বেদনাদায়ক। নেই আনন্দ, নেই কোনো আবেগ, নেই কোন আড্ডা, হারিয়ে গেছে অনিকেত প্রান্তরের প্রেমিক যুগল ফুলছড়ি। প্রথম যেদিন ক্যাম্পাসে আসি, সেদিন সিনিয়র ভাইয়েরা ক্যাফেটেরিয়া, তপনদা এর দোকান, পলাশে, ইব্রাহিমে,আদৌম্য বাংলায় বসা এবং আড্ডা দেওয়া নিষেধ করেছিল সিনিয়র ভাইয়েরা । এটা নাকি সিনিয়রদের রুলস। কিন্তু তবুও আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে উক্ত স্থানগুলোতে আমরা বন্ধু সবাই একসাথে বসতাম আর ভয় পেতাম এই বুঝি সিনিয়র ভাইয়েররা এলো, বকা দেবে, কি জানি কি হবে। এখন দিন গুলো খুবই মনে। মিস করি সিনিয়রদের বকুনি, ভালোবাসা।আর যেন নেই সেই দিনগুলো হারিয়ে ফেলেছে তার চেয়ে সেই চিরচেনা রূপ। সেই দিনগুলো আজ ধূলিকণার যুক্ত বাক্সবন্দী স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেক সময় কান্না করে ফেলি কিভাবে কি হয়ে গেল। থমকে গেল পুরো বিশ্ব এই মহামারিতে।এই ছুটিতে আমি সারাক্ষণ টিভিতে কার্টুন দেখি। মাঝে মাঝে বাবা এবং মাকে তাদের কাজে সহায়তা করি। বিকালে ঘুড়ি ওড়ানো যেন আমার নিত্য অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে।
এই মহামারিতে বাঁচতে হলে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। সবাই যেন ঘরে থাকে এই আমার বিনীত অনুরোধ। সুস্থ থাকো পৃথিবী। নিরাপদ থাকুক পৃথিবীর মানুষ।
সেজুতি শারমিন সাদিয়া।
১৯ব্যাচ।
আইন ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
অবসরে সুনির্দিষ্ট প্রতি সীমা থাকলে হয়তো এতটা বিমর্ষ বোধ করতাম না। নিয়তির খেলায় ধরিত্রী যেন ঝড়ে ভাঙ্গা বৃক্ষের ন্যায় মাটিতে লুটিয়ে আছে। তখন আমি বাবুই পাখির মত ছোট্ট কুটিরে অপেক্ষার প্রহর গুনছি কখন করোনা নামের ভয়াবহতার ইতি হবে। ক্যাম্পাসের রঙিন দিনগুলো চোখের সামনে সব সময় ভেসে বেড়ায়। মনে পড়ে প্রিয় মুখগুলোর ছায়া। মিস করি প্রিয় হল অপরাজিতার রুমমেটদের খুনসুটি, হলে রান্নার প্রতিযোগিতা, কার রান্না সবথেকে উৎকৃষ্ট। ক্যাম্পাসের প্রতিটা বৃক্ষ আমাকে টানে। শত বছরের স্মৃতি যেন তাদের সাথে একতাবদ্ধ। এখন বাসায় সারাদিনই আমি বই পড়ি ছোট ভাই বোনদের সাথে খুনসুটি।ছাদে কিছু ব্ল্যাক ডায়মন্ড জাতের গোলাপ লাগিয়েছি সকাল-বিকেল তাদেরই দেখাশোনা করি। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি করণা নামের এই বিশ্ব কাঁপানো ত্রাস যেন খুব তাড়াতাড়ি পৃথিবী থেকে উঠে যায়। প্রিয় ক্যাম্পাসটা জন্য আবার কোলাহলপূর্ণ হয়। সেই কোলাহলে মেতে উঠতে চাই প্রিয় মানুষগুলোর সাথে। ভালো থাকুক প্রত্যেক খুবিয়ান। পৃথিবীর মানুষ যেন সুস্থ সবল জীবন যাপন করতে পারে। এই আমার প্রত্যাশা।
আনিশা পুকি।
১৭ ব্যাচ।
সসমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
মানুষ মহাশয় যাহা সহায় তাহাই সয়। কে কথাটি বলেছে তা আমার জানা নেই। কিছুক্ষণ পূর্বে তা আমি বিশ্বাস করতাম না। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ যখন ঘরে চিড়িয়াখানার প্রাণীর ন্যায় অপেক্ষার প্রহর গুনছে, আর তখন মুক্তবিহঙ্গ বিনা পয়সায় দেখা যাচ্ছে আর বলছে” হে মানবজাতি একসময় তোমরা আমাদের খাঁচায় বন্ধ করেছ আর এখন আমরা কিন্তু তোমাদের বন্দি করি নাই প্রকৃতির স্বয়ং তোমাদের বন্দী থাকতে বাধ্য করেছে। প্রভাতের সোনালী রোদ টুকু পর্যন্ত তোমরা এখন জানালা দিয়ে দেখছো।পাখিরা এরকমভাবে কিনা জানিনা, তবে সারাক্ষণ আমি প্রকৃতিকে নিয়ে এরকম ভাবতে থাকি। কিছুকাল পূর্বে ও মানুষ পৃথিবীটাকে কিভাবে শেষ করে দিচ্ছিল। শিল্প কলকারখানার বর্জ্য বাতাসও পানিকে কিভাবে দূষণ করে তুলছিল তা আমরা দেখেছি। যে দুটি বস্তু প্রাণীর প্রথম চাহিদা সেই বাতাস ও পানি মানুষ নিঃশেষ করে দিচ্ছিল। যানবাহনের কোলাহলে মৃত্তিকার ক্ষুদ্র কীট যখন কর্নে আঙ্গুল দেওয়ার অপেক্ষায় তখন করোনার ভয়াল আগ্রাসন। পৃথিবী এখন শান্ত। নেই কোন কোলাহল। এখন আমার ঘুম থেকে উঠতে এলার্মের এর প্রয়োজন হয় না। প্রভাতী দোয়েলের গুনগুন সঙ্গীতে আমি নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয়।সব মিলিয়ে ভালো আছি পরিবারের সবাই একসাথে জীবন অতিবাহিত করছি। করোনার ভয়াবহতা যদি না আসতো তবে হয়তো পরিবারের সবাইকে একসাথে পেতাম না। তবুও হৃদয়ের ভিতর সব সময় হাহাকার কাজ করে প্রিয় মানুষদের জন্য। যাদের প্রিয় মুখ শেষ ক্যাম্পাসে দেখেছি মনে করে তাদের সেই মলিন বদন।সব সময় মনে হয় কখন প্রিয় ক্যাম্পাসে যাব আর বন্ধুদের সাথে সেই আড্ডা। ছোট বেলা থেকে আমার ইচ্ছা আমি বলি বল খেলব কিন্তু মেয়ে হয়ে পরিবার তা মেনে নেয়নি। গত পরশু অনেক কষ্টে বাবাকে রাজি করে একটা ভলি বল কিনে আনিয়েছি।বারান্দায় সারাক্ষণ সে ভলিবল নাড়াচাড়া করাই এখন আমার সময় কাটানোর প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আমি অপেক্ষায় আছি কবে শেষ হবে এই পীড়াদায়ক লকডাউন। ফিরতে পারব প্রিয় ক্যাম্পাসের আঙ্গিনায়। ভালো থাকুক সবাই।
মেহেদী বখতিয়ার।
১৯ ব্যাচ।
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
টানা একমাস ক্যাম্পাসের বাইরে। কবে ক্যাম্পাসে ফিরতে পারবো, জানিনা। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়াই বাড়িতে এসেছি। তবে এই সময়টা ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা গানে মেতে থাকার কথা ছিলো। কথা ছিলো নীল বাসের গেটে দাঁড়িয়ে গলা ছেড়ে গান গেয়ে রূপসা ব্রিজ পার হওবার। কথাছিল খেলায় জয়লাভ করে হলরোডে আনন্দ মিছিল করার। কথা ছিল হলে রাত জেগে বন্ধুদের সাথে তাস খেলা। কিন্তু গল্পটা এখন অন্যরকম। এখন বাসায় বসে আমি ফসলের জমির দিকে তাকিয়ে থাকি। তাকিয়ে থাকে গ্রামের মানুষগুলোর দিকে। তারা জানেই না যে করো নাকি কি এর পরিণাম, কিভাবে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে সমগ্র বিশ্বে।তারা নির্ভাবনায় কাজ করে যাচ্ছে ফসলি ক্ষেতে। মাঝে মাঝে বিকালে আমি একলা একলা বিলে ঘুরতে যাই। একলা একলাই নৌকা বায়। আর দেখি বিলের কালো জল কিভাবে ঘুরছে।এই ছুটিতে আমি এখন শুধু বই পড়ি,আর কিছু লেখার চেষ্টা করি। এখন আমার প্রধান কাজ। বাবা-মায়ের গৃহস্থালী কাজে সাহায্য করি। ছোট বোনের লেখাপড়ায় সাহায্য করি। এইতো এভাবেই বেঁচে আছি । আর অপেক্ষায় আছি কবে প্রিয় ক্যাম্পাসের দেখা পাবো। কবে পূরণ হবে এই মধ্যবিত্ত ছেলের রঙিন স্বপ্ন। করানোর এই ভয়াবহ আগ্রাসন যেন কেড়ে না নেয় প্রত্যেকটা খুবিয়ানের স্বপ্ন। দোয়া করি প্রত্যেকটা মানুষের স্বপ্ন যেন পূরণ হয়। কেটে যাক করোনার এই কালো মেঘ।
আসিফ ইনজামান হৃদয়।
১৯ ব্যাচ।
ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
নিজের ক্যাম্পাস,বন্ধুবান্ধব, সিনিয়র জুনিয়র দের সাথে দিনগুলো ভালোভাবেই কেটে যাচ্ছিলো,কিন্তু করোনার থাবা,সব কিছুই হুট করেই থেমে গেলো।ভার্সিটি বন্ধ,কাছের মানুষদের সাথে দেখা হয়না অনেকদিন,একসাথে ঘুরতে যাওয়া,আড্ডা দেওয়া আর আড্ডার ফাকের সেল্ফি গুলোও নেওয়া হয়না অনেক দিন।খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্রিল মাস যেখানে পুরো প্যারাময় একটা মাস,সেখানে সবাই ছুটিতে,নেই কোনো পড়াশোনার চাপ,নেই সেই আড্ডাটাও।
এইসময়টাতে ক্যাম্পাস টাকে খুব বেশি মিস করছি।তাই বলে তো জীবন থেমে নেয়,ছুটিটা সারাদিন বাড়ি থেকেই কাটাচ্ছি,
অনেকটা শুয়ে বসেই কেটে যাচ্ছে।এই সময়টাতে নিজের কিছু স্কিল ডেভেলপমেন্ট করছি,মাইক্রোসফট ওয়ার্ড,পাওয়ারপয়েন্ট, এক্সেল,সাথে এডোবি ইলেস্ট্রাটর সহ নানা কাজ।
মাঝে মাঝে বাড়ির কাজ গুলো করি,পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মজা করে দিন কাটায়,তাদের সাথে লুডু, দাবা বা ক্যারাম খেলা।মাঝে মাঝে সিনেমা দেখা,টিভি দেখা, বই পড়া,আবার কখনো বাড়ির বাচ্চাদের সাথে খেলা করেই দিনটা কাটে।
আর আত্মীয়, ভার্সিটির বন্ধু,সিনিয়র, জুনিয়র সবার সাথে ভিডিও কলে আড্ডা,গ্রুপ চ্যাট,আর ফেইসবুক, ওয়াটসএপ করেই প্রতিটি দিন কেটে যায়।
আর সবসময় নিজের ছোটো ক্যাম্পাসটাকে মিস করা,সেই হলরোড,ক্যাফেটেরিয়া, তপনদার দোকান।
রেজওয়ান আহম্মেদ।
১৯ ব্যাচ।
ইংরেজি ডিসিপ্লিন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
ছুটি বরাবরই আনন্দের হয় কিন্তু এবারের ছুটিটা আকস্মিক, নেই কোনো সময়সীমা। কোরেন্টাইনের দিনগুলো কাটতেছে খুবই হতাশায়, চেপে ধরতেছে কেমন যেন অজানা আতঙ্কে। বাসায় এসে ১ম দিকে কিছু সামাজিক সচেতনতামুলক কাজ করেছিলাম কিন্তু বতর্মানে পরিবারের চাপে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না তবে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফান্ড কালেক্ট করার চেষ্টা করছি। ক্যাম্পাসটাকেও মিস করছি খুব, মিস করছি প্রিয় মানুষগুলোকে। উঁকি দিচ্ছে নানা প্রশ্ন ; সবাই আবার একসাথে ফিরতে পারবো তো? আমাদের পৃথিবীটা আবার কবে সুস্থ হয়ে উঠবে? আমরা আবার প্রানখুলে হাটতে পারবো হাদী চত্বরে?