শতাব্দীর ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস এর সংকট পরবর্তী সম্ভাব্য বৈশ্বিক দূর্ভিক্ষ মোকাবিলায় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, করোনার দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির বর্তমান ধারা শুধু অব্যাহত রাখা নয়, তা আরো বেগবান করতে হবে।
এ লক্ষ্যে তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সকলকে নিজ নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে নিরলসভাবে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
আজ ৭ মে বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনায় অনলাইন সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনার কারণে প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হলেও অবশিষ্ট সময়ের মধ্যে কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী যেমন ফ্রন্টলাইনে থেকে কাজ করে যাচ্ছে তেমনি কৃষিতে প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়ে হলেও কাজ করে যেতে হবে। যাতে দেশে খাদ্যের কোন ঘাটতি না হয়, দুর্ভিক্ষ না হয়।
এসময় কৃষিমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সকল সংস্থা ও প্রকল্প পরিচালকগণকে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার আহ্বানও জানান।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনাসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের সবচেয়ে বড় মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য। আমরা কোনোক্রমেই মানুষকে অভুক্ত রাখতে পারি না। এদেশের সকল মানুষের পর্যাপ্ত খাদ্য বিশেষ করে ধান, গম, ভুট্টা, সবজি, ফল প্রভৃতির প্রয়োজনীয় সরবরাহ আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য খাদ্য উৎপাদনে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, বর্তমান অর্থবছরে মার্চ, ২০২০ পর্যন্ত অর্জিত জাতীয় গড় অগ্রগতি অপেক্ষা এ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রগতি বেশি হয়েছে। তাই এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
সভায় জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় মোট ৭৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। সংশোধিত এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত ৭৮টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট বরাদ্দ আছে ১৭৬৩.৯৪ কোটি টাকা, তন্মধ্যে জিওবি ১৪৩৪.৩৯ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৩২৯.৫৫ কোটি টাকা। এ অর্থ বছরে এপ্রিল, ২০২০ পর্যন্ত সময়ে অর্থ অবমুক্ত হয়েছে ১১৭২.১৬ কোটি টাকা, যা মোট সংশোধিত বরাদ্দের ৬৬.০০ শতাংশ এবং অর্থ ব্যয় হয়েছে ৮৬১.৪২ কোটি টাকা, যা মোট সংশোধিত এডিপি বরাদ্দের ৪৯ শতাংশ, এর মধ্যে জিওবি খাতে ব্যয় হয়েছে ৪৮.০০ শতাংশ এবং প্রকল্প সাহায্য খাতে ব্যয় হয়েছে ৫৪.০০ শতাংশ। এ সময় পর্যন্ত জাতীয় গড় অগ্রগতি ৪৩.৭৩% শতাংশ।
এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংস্থা প্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।