জেনারেল ইয়াহিয়া খানের এক রকম কাল্পনিক ধারণা ছিল যে তিনি একজন তুখাের অভিনেতা আর তার ইংরেজি উচ্চারণ চমৎকার।
যুদ্ধের কিছুকাল পূর্বে তিনি বাড়িতে নাটক আয়ােজন করতেন। তার পছন্দের নাটক ছিল জুলিয়াস সিজার যেখানে তিনি মার্ক এন্টোনির ভূমিকায় অভিনয় করতেন। এই নাটকের মঞ্চায়ন অনুষ্ঠানে তার পছন্দের বান্ধবীরা আর পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা উপস্থিত থাকত।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার তিন দিন পর জেনারেল ইয়াহিয়া খান তার এক অধীনস্ত জেনারেলের আমন্ত্রণে এক অনুষ্ঠানে যান। বেশ আঁকজমকপূর্ণ ছিল সে অনুষ্ঠান। দেশে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে সেরকম কোনাে কিছুই বােঝা যাচ্ছিল না সেই অনুষ্ঠানে।
ইয়াহিয়া খান হঠাৎ করে তার মুখের জ্বলন্ত সিগারেট অনুষ্ঠানের সাজিয়ে রাখা বেলুনগুলাের মধ্যে চেপে ধরতে শুরু করলেন।
সিগারেটের আগুনে একটা একটা বেলুন ফাটছিল আর ইয়াহিয়া খান খুশিতে চিৎকার করে উঠছিলেন এই বলে- ‘জাগজিভ রাম ধ্বংস হলাে’, তারপর আরেকটা বেলুন ফাটিয়ে বললেন, ‘এই তাে ভুট্টো ধ্বংস হলাে’ এইভাবে একের পর এক বেলুন ধ্বংস করতে করতে শেষ পর্যন্ত বললেন, ‘এখন শেখ মুজিব ধ্বংস হলাে।
’ সিগারেট দিয়ে বেলুন ফাটানাের এই নাটক শেষ করে জেনারেল ইয়াহিয়া খান তখন অনুষ্ঠানে উপস্থিত মেহমান পাকিস্তানের তৎকালীন বিখ্যাত গায়িকা ম্যাডাম নুরজাহানকে নিয়ে পাশের একটা ঘরে চলে গেলেন।
ঘরের দরজা বন্ধ করে পাঁচ ঘণ্টার মতাে সেখানে থাকলেন। বাইরে অনুষ্ঠান চলছে আর ভেতরে তারা দুজন।
গায়িকা নুরজাহানকে পরবর্তীতে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য এবং ইয়াহিয়া খানকে সঙ্গ দেয়ার জন্য অনেক মূল্য দিতে হয়েছিল। পাকিস্তানি মিডিয়া নুরজাহানকে কালাে তালিকাভুক্ত করেছিল। দীর্ঘদিন তার কোনাে গান রেডিও কিংবা টেলিভিশনে প্রচারিত হয়নি।















