ছয়-সপ্তাহের ফুলব্রাইট টিচিং এক্সিলেন্স অ্যান্ড এচিভমেন্ট (টিইএ) প্রোগ্রামের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করছেঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। নির্বাচিত আবেদনকারীগণ তাদের পছন্দমতো ২০২১ সালের স্প্রিং (ফেব্রুয়ারি – মার্চ) কিংবা ফল (সেপ্টেম্বর – নভেম্বর) সেশনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বুধবার ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়।
বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত শিক্ষকরা বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে নির্বাচিত শিক্ষকদের সাথে মিলে তাদের পছন্দমতো ২০২১ সালের স্প্রিং কিংবা ফল সেশনে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রোগ্রামে অংশ নেবেন। ফুলব্রাইট টিইএ প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা তাঁদের নিজ নিজ বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের অনন্য সুযোগ পাবেন, তাদের শিক্ষাদানের দক্ষতা বাড়বে, এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তাদের জ্ঞান প্রসারিত হবে । এই প্রোগ্রামে পাঠক্রম ও পাঠদান পদ্ধতি, পাঠ পরিকল্পনা, এবং শেখানোর কৌশলের উপর নিবিড় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে যাতে করে তারা নিজ নিজ দেশে ফিরে এসে সেগুলো নিজ দেশের পরিবেশে কাজে লাগাতে পারেন।
এছাড়াও তাদেরকে ইন্টারনেট, ওয়ার্ড প্রসেসিং, এবং শিক্ষাদানের একটি মাধ্যম হিসেবে কমপিউটারের ব্যবহার শেখানো হবে। ছয় সপ্তাহের এই প্রোগ্রামের আওতায় অংশগ্রহণকারীরা দুই সপ্তাহের জন্য আমেরিকার একটি মাধ্যমিক স্কুলে ইন্টার্ণশিপ করার সুবাদে আমেরিকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করার সুযোগ পাবেন। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ দর্শণীয় স্থানগুলোতে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পুরো প্রোগ্রাম জুড়েই একাডেমিক সহায়তা দেয়া হবে।
ফুলব্রাইট টিচিং এক্সিলেন্স অ্যান্ড এচিভমেন্ট গ্রান্ট প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত শিক্ষকরা যে সহায়তাগুলো পাবেন তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: জে-১ ভিসা সহায়তা; ঢাকায় একটি প্রি-ডিপারচার ওরিয়েন্টেশন; ঢাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র উভয়পথে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে যাতায়াতের বিমান ভাড়া; ওয়াশিংটন ডিসি-তে একটি ওয়েলকাম ওরিয়েন্টেশন; একাডেমিক প্রোগ্রাম বা শিক্ষা কার্যক্রমের যাবতীয় খরচ; বাসস্থান (সাধারণত এই প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত অন্য কারো সাথে রুম শেয়ার করতে হয়) এবং খাবার; দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্য বীমা; ইন্টার্ণশিপ স্কুলে যাতায়াত খরচ (যদি দরকার হয়); বইপত্র কেনা/পেশাগত উন্নয়নের জন্য ভাতা; যুক্তরাষ্ট্রে ফুলব্রাইট টিইএ প্রোগ্রাম আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটিতে আয়োজিত সমাপনী সেমিনারে অংশগ্রহণের সুযোগ; ভবিষ্যতে নিজ দেশে (বাংলাদেশে) একজন আমেরিকান শিক্ষকের নিমন্ত্রণকারী/হোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সম্ভাব্য সুযোগ পাওয়া এবং পরবর্তীতে পেশাগত উন্নয়নের লক্ষ্যে অনুদানের জন্য আবেদনের সুযোগ।
এই প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য একজন আবেদনকারীর অবশ্যই নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলো থাকতে হবে:
• মাধ্যমিক-পর্যায়ে বর্তমানে কর্মরত একজন পূর্ণকালীন (ফুলটাইম) শিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন বিষয় যেমন সামাজিক অধ্যয়ন, নাগরিক শিক্ষা, গণিত, বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজি, এবং বিজ্ঞান বিষয়ে পাঁচ বা ততোধিক বছর ধরে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের অভিজ্ঞতা;
• বাংলাদেশের নাগরিক এবং যার বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট রয়েছে;
• নেতৃত্বের গুণাবলীর প্রামাণ্য দলিলপত্রাদি এবং যিনি ফুলব্রাইট টিইএ প্রোগ্রাম শেষে দেশে ফিরে কমপক্ষে আরো পাঁচ বছর শিক্ষকতার পেশায় থাকার প্রতিশ্রুতি দেবেন;
• ইংরেজিতে কথা বলা ও লেখায় দক্ষতা। ফুলব্রাইট টিইএ প্রোগ্রামের জন্য ইংরেজি ভাষায় ভালোমানের দক্ষতা লাগবে, কারণ এই প্রোগ্রামের আওতায় যারা যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন তাদেরকে একাকী চলাফেরা করা, নিজের কাজগুলো করতে পারা এবং ইউনিভার্সিটি ও পেশাগত আলোচনায় নিজের ধারণা ও মতামত সুস্পষ্ট ও কার্যকরভাবে প্রকাশ করতে পারতে হবে;
• সাধারণ মানের কমপিউটার দক্ষতা থাকতে হবে যাতে করে কমপিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখার কাজ করতে পারা, ফাইল ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক জ্ঞান এবং মাইক্রোসফট অফিস সম্পর্কে ধারণা থাকে;
• একটি পূর্ণাঙ্গ আবেদনপত্র জমা দিতে হবে, যার মধ্যে থাকবে:১. একটি পূরণকৃত পূর্ণাঙ্গ আবেদন ফরম (অনুগ্রহ করে নির্দেশাবলীর পৃষ্ঠাগুলো সংযুক্ত করবেন না);২. একটি বর্তমান অবস্থা উল্লেখপূর্বক সর্বশেষ হালনাগাদ করা সিভি;৩. সুপারভাইজর কর্তৃক পূরণকৃত একটি প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ও রেফারেন্স ফরম (ISRF-আইএসআরএফ);৪. একটি অনুমোদিত ছুটির আবেদন ফরম (LAF-এলএএফ);৫. আবেদনকারীর পাসপোর্টের ফটোকপি (কেবলমাত্র তথ্য আছে এমন পৃষ্ঠাগুলো);৬. একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি; এবং৭. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের অনুলিপি (শুধু স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর মার্কশিট বা ট্রান্সক্রিপ্ট)।
বাছাইকৃত প্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা শিক্ষকদের টোফেল বা আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে হবে, কারণ এই প্রোগ্রামের জন্য ইংরেজিতে ভালোমানের দক্ষতা থাকার প্রয়োজন রয়েছে। ফুলব্রাইট টিইএ প্রোগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য আইইএলটিএসে ৬.০ বা তারচেয়ে বেশি স্কোর কিংবা ইংরেজি ভাষার অন্য কোন পরীক্ষায় সমমানের স্কোর থাকতে হবে। আবেদনকারীদের মধ্যে যাদের ইংরেজি ভাষার উপর দেয়া পরীক্ষায় বৈধ স্কোর রয়েছে অর্থাত্ স্কোরের মেয়াদ শেষ হয়নি, তাদেরকে নতুন করে ইংরেজি ভাষার উপর পরীক্ষা দেয়ার দরকার নেই।
আমেরিকান সেন্টার প্রয়োজনানুযায়ী সকল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে।আবেদনকারীদের অবশ্যই আবেদন করার সকল নির্দেশাবলী এবং জমা দেওয়ার নির্দেশনা মেনে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
উপরে তালিকাভুক্ত যোগ্যতার চাহিদা পূরণ করে না এমন আবেদনপত্রগুলো বাছাই কমিটিতে পাঠানো হবে না। বাছাইকৃত প্রার্থীদের সাক্ষাত্কারের জন্য ডাকা হবে, এবং এই সাক্ষাত্কার ইংরেজিতে নেয়া হবে।এই ঘোষণার কপি এবং অনলাইন আবেদন করার ফরমগুলো পেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন:https://bd.usembassy.gov/education-culture/programs-for-professionals/
আবেদনকারীরা অনলাইনের আবেদন ফরমগুলো যথাযথভাবে পূরণ করে পূর্ণাঙ্গ আবেদনপত্র এবং আবেদনে উল্লেখিত তথ্যের সমর্থনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (সফটকপি) মিজ তানিয়া শহীদ বরাবর ShahidTX@state.gov ইমেইল ঠিকানায় পাঠাতে পারেন কিংবা আবেদনকারী পূরণকৃত ও তথ্যের সমর্থনে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র (হার্ডকপি) বড় খামে ভরে খামের উপর attention: Ms. Tahnia Shahid, Public Affairs Section লিখে বারিধারার জাতিসংঘ রোডে নেপাল দূতাবাসের নিকটে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স সেকশনের সিকিউরিটি গেটে জমা দিতে পারেন।
পূরণকৃত পূর্ণাঙ্গ আবেদনপত্র ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ইমেইলে সফটকপি কিংবা খামে ভরে হার্ডকপি উপরে দেয়া ঠিকানায় অবশ্যই ১০ জুন ২০২০ তারিখ, বুধবার এর মধ্যে জমা দিতে হবে।
আবেদন করার শেষ তারিখটি চূড়ান্ত, এটি আর বাড়ানো হবে না। আগে যারা এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করেছিলেন তারা পুনরায় আবেদন করতে পারেন। সকল আবেদনকারীকে একথা স্মরণ করিয়ে দেয়া যেতে পারে যে, এই প্রোগ্রামে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি একটি বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা এবং সকল আবেদনকারীকে একটি তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে জানানো হবে।