নোয়াখালী, ২১ ডিসেম্বর ॥ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় তার নিজ জেলা নোয়াখালীর সর্বত্র আনন্দ মিছিল হয়েছে। চলেছে মিষ্টি বিতরণও।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে নেতৃত্ব নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়।
এ সময় সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন বিগত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। তার প্রস্তাব সমর্থন করেন বিগত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান। পরে সর্বসম্মতিক্রমে তা পাস করেন কাউন্সিলররা।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বড় রাজাপুর গ্রামে ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ওবায়দুল কাদের জন্মগ্রহণ করেন। নোয়াখালী-৫ আসন থেকে (কোম্পানিগঞ্জ-কবিরহাট) তিনি চারবার সাংসদ নির্বাচিত হন।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর নোয়াখালী থেকে আওয়ামী লীগের একমাত্র সভাপতি নির্বাচিত হন আব্দুল মালেক উকিল। এরপর সেখান থেকে আর কেউ দীর্ঘ মেয়াদে এত বড় পদ পাননি। এ জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জেলার সাধারণ মানুষও বেশ উচ্ছ্বসিত।
ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। পরে জেলা শহরে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
এদিকে ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাটেও আনন্দ মিছিল হয়েছে। চলেছে মিষ্টি বিতরণও।
কোম্পানীগঞ্জসহ জেলার সবকটি উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলেন, আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরকে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করায় উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই অভিনন্দন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী কাদের ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে বিভিন্ন স্তরে গ-ি পেরিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একইসঙ্গে বর্তমানে পালন করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর দায়িত্বও। ওবায়দুল কাদের টানা দ্বিতীয়বারের মতো এখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
স্কুলের গ-ি পার হওয়ার আগেই ছাত্র আন্দোলনে নাম লিখিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়ার ধারাবাহিকতায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে শুরু করে সামলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, পালন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
বসুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি এবং নোয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এইচএসসি পাস করেন ওবায়দুল কাদের। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন।
দলের দুর্দিনে, দুঃসময়ে রাজপথ কাঁপানো নেতা ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধু আদর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বারবার কারানির্যাতিত হয়েছেন। ’৭৫-এর পর কারাগার থেকেই ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরপর দু’বার এ দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
ওয়ান ইলেভেনের পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকার সময়ে গ্রেফতার হয়ে ১৭ মাস ২৬ দিন কারাগারে ছিলেন। ২০০৮ সালে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
’৭৫ পরবর্তী প্রতিটি দুঃসময়ে দলের যে কোন দুর্যোগ আর সঙ্কটে ওবায়দুল কাদের নিজেকে প্রকাশ করেছেন আপোসহীন চেতনায়। অসাধারণ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতা আর দুঃসময়ে দলের নির্ভরযোগ্য নেতৃত্বের কারণে চিরদিন নেতাকর্মীদের হৃদয়ে আদর্শের মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবেন ওবায়দুল কাদের।