ওয়েবসাইট চালু রাখার প্রথম শর্তই হচ্ছে প্রতিবছর ডোমেইন ফি জমা দেয়া। কিন্তু দেশে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন ফি জমা না দেয়ার কারণে বছরে প্রায় ৫০ শতাংশ ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। খোদ সরকারেরও বেশ কয়েকটি দফতরের ডোমেইন ফি বাকির কারণে তাদের সাইট বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যক্তি পর্যায়েও একই অবস্থা ঘটছে। নতুন করে ডোমেইনসহ ওয়েবসাইট তৈরি করতে বাড়তি খরচ করা হচ্ছে। জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আইকানে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এ জন্য প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট ফি জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। দেশের ওয়েবসাইটগুলোর ডোমেইন না থাকলে ওয়েব সার্চ বন্ধ হয়ে যাবে। প্রথমে অনেক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি জোরেসোরেই ‘ডোমেইন হোস্টিং’ করেন। পরে তারা সময় মতো ডোমেইন হোস্টিংয়ের টাকা পরিশোধ না করায় তা নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ক্ষেত্রে পরবর্তীতে ডোমেইন হোস্টিংয়ে বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হয়।
তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে সারাবিশ্ব বদলে দিয়েছে ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটের ব্যাপক ব্যবহার এখন শুধু ব্যবসা বাণিজ্য আর তথ্য দেয়া-নেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ওয়েবসাইট সারাবিশ্বের মানুষকে এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত করেছে। জ্ঞান বিনিময় থেকে শুরু করে তাৎক্ষণিক সব খবরাখবর পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু ওয়েবসাইট ও ডোমেইন হোস্টিং জরিপ প্রতিষ্ঠান ওয়েব হোস্টিংয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ওয়েবসাইট চালু হওয়ার পর ডোমেইন নবায়ন করা হয় না।
ফলে প্রতিবছরেই বিভিন্ন ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যায়। এসব ওয়েবসাইটে প্রতি সপ্তাহে কী পরিমাণ নতুন ডোমেইন তৈরি হলো আর কী পরিমাণ বন্ধ হয়ে গেল তার পরিসংখ্যান দেয়া হয়। এছাড়াও ডোমেইন হোস্টিংবিষয়ক খুঁটিনাটি অনেক তথ্য-উপাত্ত না জানার কারণে ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ হচ্ছে। সরকারী ওয়েবসাইটও বন্ধ হচ্ছে একই কারণে। সরকারের বিভিন্ন দফতরের ওয়েবসাইট রয়েছে। ওই সব সাইট নিয়মিত পরিচালনার অভাবে ডোমেইন হোস্টিং কবে করেছেন তা ভুলে যান। ফলে অনেক দফতরের ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নতুন করে আরেকটি সাইট খুলতে ডোমেইন হোস্টিংসহ বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় করছে তারা। এ বিষয়ে একটু সতর্ক থাকলেই ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ হয় না।
বিটিসিএল জানিয়েছে, দেশে ওয়েবসাইট ওয়েব পোর্টাল বা ওয়েব সলিউশনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সবে মাত্র এই সেক্টরে দক্ষ জনবল গড়ে উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ওয়েবসাইটের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট চলে আসার সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহারও ব্যাপক হারে বাড়ছে। অফিস, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার ফল অনলাইন অথবা ওয়েবসাইটে প্রকাশ হচ্ছে।
গ্রামের একজন ছাত্র বা ছাত্রী মুহূর্তের মধ্যে তার রেজাল্ট জানতে পারছেন। অন্যদিকে, ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে সঠিক বা রেজিস্টার্ড কোম্পানি থেকে ডোমেইন না কেনার জন্য। বেশিরভাগ ডোমেইন নবায়ন না হওয়ার পেছনে একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে গ্রাহক ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সঠিক কোম্পানি সিলেকশন করতে পারে না। ডোমেইন নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে না নেয়ার কারণে ওই কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরই নিজের ডোমেইন/ওয়েবসাইটটি বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠিত কোন কোম্পানি থেকে না নিয়ে পার্সোনাল ডোমেইন কিনলে এ ধরনের সমস্যা বেশি হতে পারে। অন্য একটি কারণেও ডোমেইন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাহলো প্রথম বছরের পর দ্বিতীয় বছর ফি ইচ্ছে মতো বাড়িয়ে দেয়া হয়। এই বাড়তি টাকা না দেয়ার কারণে ডোমেইন বন্ধ হয়ে যায়। অনেকেই বর্তমানে এ ধরনের সমস্যার শিকার হচ্ছেন। প্রথম বছর কম টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলেও পরের বছর দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ চার্জ দাবি করা হয়। ফলে ভোক্তা আর নবায়নে আগ্রহী হয় না। বিটিসিএল’র একজন কর্মকর্তা বলেন, আরও একটি কারণে ওয়েবসাইট বন্ধ হতে পারে।