প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি প্রকাশ করলো বিজ্ঞানীরা৷ এর মধ্য দিয়ে এ মহাবিশ্ব সম্পর্কিত প্রচলিত অনেক ধারণাই স্পষ্ট হবে বলে আশা করছেন তাঁরা৷
অসীম শক্তির কৃষ্ণগহ্বর: ১০০ বছর আগে জার্মান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনষ্টাইন কৃষ্ণগহ্বরের চতুরতা আর রহস্যের কথা বলেছিলেন৷ শত বছরের গবেষণায় তারই প্রমাণ হলো৷ এই মহাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কৃষ্ণগহ্বর অত্যন্ত চতুর, কেননা ক্ষণে ক্ষণে রূপ পালটায় তারা৷ কৃষ্ণগহ্বের অসীম শক্তির কাছে হার মানে সব কিছুই, এমনকি আলোও৷ আর যে কারণে, কৃষ্ণগহ্বরের আবস্থান আন্দাজ করতে পারলেও, এর ছবি তোলা সম্ভব হচ্ছিল না জ্যোতির্বিদদের পক্ষে৷
তাহলে উপায়?
প্রায় শত বছর চেষ্টার পরে একটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ আর তা হচ্ছে, কৃষ্ণগহ্বরের উপরে নয়, টেলিস্কোপ ফেলতে হবে গহ্বরের চারপাশের ছায়ার উপর৷ আর সেটিই করেছেন তাঁরা৷ আটটি শক্তিশালী রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশের ছায়ার ইমেজ ধারণ করেন তাঁরা৷ আর তখনই ধরা পড়ে উজ্জ্বল এ ছায়ার মাঝখানে কালো বৃত্তটি৷ তবে বৃত্ত নয়, এটিই হলো অন্ধকার, অসীম আর শক্তিধর কৃষ্ণগহ্বর৷
কোথায় এটি?
যে কৃষ্ণগহ্বরটির ছবি বিজ্ঞানীরা তুলতে পেরেছেন সেটি হলো সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর৷ এক রকম অগণিত দূরত্বেই কৃষ্ণগহ্বরটির অবস্থান৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী থেকে ক্ষুধার্ত এ গহ্বরটি ৫৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে এম৮৭ নামে এক ছায়াপথে৷ আর এক আলোকবর্ষ সমান ৯.৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার৷ সে হিসেবে, পৃথিবী থেকে সুপারম্যাসিভ এ কৃষ্ণগহ্বরটির দূরত্ব মাপা আমাদের অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়৷
কী হবে এখন?
কৃষ্ণগহ্বরের রয়েছে ধারণার অতীত মধ্যাকর্ষণ শক্তি৷ যে কারণে, যে কোন জিনিস এমনকি আমাদের প্রিয় পৃথিবীর মতো কয়েক শত বা হাজার গ্রহকে সে দুমড়ে মুচড়ে গিলে ফেলতে পারে৷ তবে ধারণাতীত এ রহস্যের উন্মোচন করা গেলে বর্তমানে প্রচলিত মহাবিশ্ব সম্পর্কিত সকল ধারণাই পালটে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিন্স৷
কত খরচ হলো?
আন্তর্জাতিক ইভেন্ট হরিজন টেলিস্কোপ প্রকল্পের আওতায় কৃষ্ণগহ্বরকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে ২০১২ সাল থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা৷ আর এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন ডলার৷ সূত্র: ডয়েচে ভেলে।