এবার ঢাকা_চট্টগ্রাম_কক্সবাজার হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণে বড় একটি প্রকল্প নিতে যাচ্ছে সরকার। রূপপুরের পর এটিই হবে সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
ডিজাইন স্পিড ধরা হয়েছে প্রতি ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার। স্ট্যান্ডার্ড গেজের দুটি লাইন নির্মাণ করা হবে, যেগুলোর এক্সেল লোড হবে ১৭ টন ধারণক্ষমতার। বিদ্যুত্চালিত রেলপথটি হবে পাথরবিহীন। ব্যবহার করা হবে অত্যাধুনিক ‘অটোমেটিক ব্লক’ সিগন্যাল ব্যবস্থা।
রেলপথটিতে একটি ট্রেন বিরতিহীনভাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে সময় নেবে ৫৫ মিনিট। আর বিরতি দিয়ে চললে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছতে সময় লাগবে ৭৩ মিনিট। দিনে প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে হাইস্পিড রেলপথটি দিয়ে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত দ্রুতগতির রেলপথটি নির্মাণে খরচ হবে ১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার বা প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় এখনো চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অংশের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়নি। তবে এ অংশের নির্মাণ ব্যয় ৫০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম ভায়া কুমিল্লা/লাকসাম দ্রুতগতির রেলপথ নির্মাণের জন্য ‘সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ ডিজাইন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ১১০ কোটি টাকা। চীনের ‘চায়না রেলওয়ে ডিজাইন করপোরেশন’ (সিডিআরসি) ও বাংলাদেশের ‘মজুমদার এন্টারপ্রাইজ’ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ নকশা প্রণয়নের কাজ করছে। হাইস্পিড রেলপথের জন্য সম্ভাব্য চারটি গতিপথ নির্ধারণ করেন সমীক্ষা প্রকল্পের পরামর্শকরা।
২২৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম’ রেলপথকে রাখা হয় ‘অপশন ১’ হিসেবে। ‘অপশন ২’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ২৩৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-লাকসাম-ফেনী-চট্টগ্রামকে। ‘অপশন ৩’-এ রাখা হয় ২২২ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-বাগমারা-ফেনী-চট্টগ্রামকে। আর ‘অপশন ৪’ হিসেবে রাখা হয় ২২০ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-লাকসাম-ফেনী-চট্টগ্রামকে। এ চার গতিপথের মধ্যে প্রথমটিতে (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম) হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণের সুপারিশ করেন পরামর্শকরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ গতিপথটি অনুমোদন করেছেন। রেলপথটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী (প্রতি ডলারে ৮৪ টাকা ৮৭ পয়সা) এতে ব্যয় হবে ৯৬ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এ বিনিয়োগের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টারনাল রেট অব রিটার্ন (এফআইআরআর) ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর ইকোনমিক ইন্টারনাল রেট অব রিটার্ন (ইআইআরআর) ধরা হয়েছে ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ।
সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণে ৬৬৮ দশমিক ২৪ হেক্টর জমি প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে অধিগ্রহণ করতে হবে ৪৬৪ দশমিক ২ হেক্টর।