২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার মহাসমাবেশে গ্রেনেড হামলায় মারাত্মক আহত মামুনুর রশিদের মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অসুস্থ্য শরিরে পঙ্গু দুই পা নিয়ে লাঠির উপর ভর করে নিজের ও পঙ্গু মায়ের চিকিৎসা করাতে, তিন সন্তানের লেখা-পড়ার খরচসহ সংসার চালাচ্ছেন ভিক্ষা করে।
এখনও তার সে দিনের নারকীয় স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও সে দিনের দুঃসহ স্মৃতি আজও কষ্ট দেয় তাকে। ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে নিহত ও আহত পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত দুই থেকে দশ লাখ টাকা অনুদান পেলেও এলাকার কেউ আর তাকে সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।
আহত মামুনুর রশিদ (৪৫) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের আঠিয়াতলী গ্রামের বর্বরোচিত এ গ্রেনেড হামলায় আহত ঢাকার মেট্রপলিটন পুলিশের বাস চালক। কথা হয় মামুনুর রশিদের সাথে, তিনি গত ২০০২ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের গাড়ী চালিয়ে আসছিলেন। যার গাড়ী নং- ঢাকা মেট্ট্রো চ-৭৫৭১, চ-৫২০২, চ-০০২২, লাইসেন্স নং- গপ-০৪৮৯৬২৮ম এবং পরিচয়পত্র নং-১৯৭৫৫৫১১৪৩৬০৭৪৯২২২।
গত ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট জনসভাস্থলে পুলিশের গাড়ী নিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন। এ সময় গ্রেনেড হামলার সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেলে মানুষের পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে মারাত্মক আহত হন। এতে তার কমর, দুই পা, যৌনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হন। ওই সময় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ী ফিরে আসেন। তার সুচিকিৎসা নিতে ২০০৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারী লক্ষ্মীপুর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সুপারিশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করলেও তা পাওয়া যায়নি।
পঙ্গু মামুনুর রশিদ বর্তমানে তার পঙ্গু মা, স্ত্রী, তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করে তিন সন্তানের লেখা-পড়া, নিজের ও পঙ্গু মায়ের চিকিৎসা ও সংসার চালাতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর যদি আমার ও পরিবারের জন্য একটা বাসস্থানের ব্যবস্থা করতেন, তাহলে উপকৃত হতাম।
এ বিষয়ে লাহারকান্দি ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শারফ হোসেন মশু জানান, পঙ্গু মামুনুর রশিদ ও তার মাকে ৬ মাস পরপর পঙ্গু ভাতা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তাকে ও তার পরিবারকে আরো সহযোগীতা করা হবে।