মাগুরা প্রতিনিধিঃশালিখা আইডিয়াল টেকনিক্যাল ও বিএম কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ভূয়া নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভূক্তির আবেদন প্রেরণের অভিযোগ। অভিযোগটি করেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের বাংলার প্রভাষক সুকান্ত মজুমদার।
প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভূক্ত হয়েছে। সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তিনি বাংলার প্রভাষক পদে নিয়মিত পাঠদান করে আসছে,১ বছর অধ্যক্ষের চলতি দায়িত্বও পালন করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারেন তার বদলে ভূয়া নিয়োগ দেখিয়ে বর্ণালী শিকদার নামে একজনের এমপিওভূক্তির আবেদন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রেরণ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উক্ত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মোঃ তানভীর রহমানের দপ্তরে অভিযোগ পত্র দাখিল করেছেন। অভিযোগ পত্রের সাথে তিনি তার নিয়োগ প্রক্রিয়ার যাবতীয় নথিপত্রাদির অনুলিপি জমা দিয়েছেন।
এবিষয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানায় বর্ণালী শিকদার নামে এই প্রতিষ্ঠানে কোনো বাংলার শিক্ষককে এ যাবতকাল তারা পাঠদান করতে দেখেননি।তারা বলেন বাংলার প্রভাষক পদে সুকান্ত মজুমদারকে নিয়মিত পাঠদান করতে দেখেছি। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এর পূর্বেও অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছেন। এলাকাবসী ও অভিভাবকবৃন্দ এ ধরণের জালিয়াতির সাথে জড়িতদের শাস্তি ও বাংলার নিয়মিত শিক্ষক সুকান্ত মজুমদারের এমপিওভূক্তির দাবী জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অত্র প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী বলেন অর্থের বিনিময়ে এধরণের জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
বুনাগাতী ইউনিয়নে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে অত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বক্তিয়ার লস্কর বলেন, সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি প্রকৃত বাংলার শিক্ষক সুকান্ত মজুমদারের এমপিওভূক্তির জন্য প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের নিকট দাবী জানান। এছাড়াও তিনি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে এধরনের জালিয়াতির সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অত্র প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক জানান অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস এখনও বাবুখালী ডিগ্রী কলেজে হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক পদে কর্মরত আছেন। যেটি একটি এমপিওভূক্ত পদ, আইনগতভাবে কোনো শিক্ষক একইসাথে দুটি এমপিওভূক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে একটি থেকে পদত্যাগ করতে হয়।
এবিষয়ে শালিখার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর রহমান বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ আমার দফতরে এসেছে । আমি অধ্যক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে একটি চিঠি ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি । ওই ব্যাখ্যা পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, সুকান্ত মজুমদারকে অত্র প্রতিষ্ঠানে একজন অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি নিয়োগের পরপরই প্রতিষ্ঠান বিরোধী নানা কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন । অন্যদিকে প্রতিষ্ঠান ও এমপিওর নিয়েম মেনেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওর দরখাস্ত পাঠানো হয়েছে । একই সঙ্গে ইতিমধ্যে ওই শিক্ষক ২০১৮ এর এমপিও নীতিমালার ভিত্তিতে কলেজের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার মর্মে কোন ধরনের অভিযোগ অনুযোগ করবেন না মর্মে কলেজ অনুকুলের একটি অঙ্গীকারনামা প্রদান করেছেন।