সকাল পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন মোহাম্মদ নাসিমকে। এর পরই খবরটি পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এ সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৩ জুন) এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিতার (জাতীয় চারনেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী) মতোই মোহাম্মদ নাসিম আমৃত্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন। সব ধরনের ঘাত-প্রতিঘাত উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠায় তিনি অনন্য অবদান রেখেছেন।
ভাঙা হৃদয়ে শোকবার্তা লিখতে বসেন আওয়ামী লীগ প্রধান। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিমকে নিজের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিতার মতোই মোহাম্মদ নাসিম আমৃত্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে ধারণ করেছেন, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন। সকল ঘাত-প্রতিঘাত উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠায় তিনি অনন্য অবদান রেখেছেন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন দেশপ্রেমিক ও জনমানুষের নেতাকে হারাল। আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
করোনার উপসর্গ নিয়ে গত ১ জুন রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। পরে তাঁর করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয় এবং ওই দিন রাতে তাঁর করোনা পজিটিভ আসে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও পরদিন থেকেই মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থা উন্নতি হয়। কিন্তু গত ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোক করেন। পরে জরুরিভাবে ওই দিনই তাঁর অপারেশন করা হয়। পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাঁকে ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন।
শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। কয়েক দিন ধরে তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন। গত ৫ জুন থেকে তিনি কোমায় ছিলেন। একপর্যায়ে আজ শনিবার (১৩ জুন) সকাল পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
এর আগে ওয়ান ইলেভেনের সময় কারাবন্দি অবস্থায় স্ট্রোক করেছিলেন নাসিম। এবার ছিল তার দ্বিতীয় দফায় স্ট্রোক। এ অবস্থায় গত ৯ জুন তার পুনরায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করা হয়। ওইদিন করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়ার চেষ্টাও করা হয় ৷ কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হওয়ায় বিদেশ নেওয়ার মতো অবস্থা থাকে না। ফলে চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি ৷
শনিবার সকাল ১১টা ১০মিনিটে রাজধানীর শ্যামলী বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোহাম্মদ নাসিম শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।