পাবনা সুগার মিল কর্তৃপক্ষের কাছে মিলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিদের ৩১ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। এর মধ্যে আখচাষিদের প্রায় ২৫ কোটি এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বাবদ ৬ কোটি টাকা রয়েছে। ফলে করোনা মহামারীর সময় চরম অর্থ সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
শুক্রবার (১৯ জুন) আখচাষী এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। এদিকে মিল কর্তৃপক্ষ বলছেন, প্রায় ৪০ কোটি টাকার চিনি গুদামে মজুদ রয়েছে। উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় চাষিদের পাওনা টাকা এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে না।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চাষি এবং আখচাষি কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বাদশা জানান, সারাদেশের চিনি মিলগুলোর কাছে কৃষকদের পাওনা রয়েছে প্রায় ১৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে পাবনা সুগার মিলের কাছে স্থানীয় কৃষকদের পাওনা প্রায় ২৫ কোটি টাকা। কৃষকদের আখ চাষে বীজ, সার, সেচ ও পরিচর্যা ইত্যাদি করতে গিয়ে টাকা ধার-দেনা করতে হয়। মিলের টাকা পেলে সেই দেনা পরিশোধ করেন চাষিরা। কিন্তু গত ১০ মাস ধরে বকেয়া পাওনা মিল কর্তৃপক্ষ না দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা।
ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া গ্রামের আখচাষি মুরাদ মালিথা জানান, মিল চালু রাখায় আখচাষিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অথচ এই খারাপ সময়েও যদি পাওনা টাকা আটকে রাখা হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কৃষকরা আখচাষে নিরুৎসাহিত হবেন।
আখচাষি সমিতির সদস্য রকিবুল ইসলাম আব্দুস ও সালাম বলেন, করোনার সংকটে বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ। কোনও কাজ নেই। সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়ছে। কারও কাছে হাত পাতার অভ্যাস নেই। মিল কর্তৃপক্ষ পাওনা টাকা পরিশোধ না করায় মানবেতর জীবনযাপন করছি।
পাবনা সুগার মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন জানান, বেতন-ওভারটাইম ইত্যাদি মিলিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনার পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকা। করোনা পরিস্থিতিতে অবিলম্বে আখচাষিদের পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।
পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুদ্দিন জানান, চলতি বছরের ৭ মার্চ আখ মাড়াই মৌসুম শেষ হয়। প্রায় ৪০ কোটি টাকার চিনি গুদামে মজুদ রয়েছে। উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন।