পৃথিবীর অনেক দেশে মহামারী করোনার লাগাম টানা সম্ভব হলেও বাংলাদেশে এখনো বেলাগাম। আক্রান্ত আর মৃত্যু দুটোই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৪১২ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জন। এই সময় মারা গেছেন ১ হাজার ৫৪৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে প্রাণঘাতী করোনায় কেড়ে নিলো আরও ৪৩ জনের প্রাণ। যার হাত ধরে দেশে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৫৪৫ জন।নতুন শনাক্ত ৩৪১২ জন সহ দেশে এই মুহুর্তে শনাক্ত এক লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জন। তবে আশার কথা হলো গত ২৪ ঘন্টায় ৮৮০ জন সহ মোট ৪৭ হাজার ৬৩৫ জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।
আজ ২৩ জুন মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মহাখালিস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে ৬৫ টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৫৬৩ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৬ হাজার ২৯২ টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৬ লাখ ৪৪ হাজার ১১ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৪১২ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৩ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৫৪৫ জনের পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরও ৮৮০ জন মোট ৪৭ হাজার ৬৩৫ জন।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২০.৯৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৯.৯৬ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। আজ মৃতদের লিঙ্গ বিভাজনে পুরুষ ৩৫ নারী ৮ জন।
এদিকে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯২ লাখ। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারস এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯১ লাখ ৯২ হাজার ৭১২ জন। এর মধ্যে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে ৪৯ লাখ ৩৯ হাজার ৪২২ জন। করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ এখনও বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর তুলনায় সুস্থ হয়ে উঠাদের সংখ্যা ১০ গুণের বেশি। এই পরিসংখ্যান আমাদের আশার আলো দেখায়।
ওয়ার্ল্ড ওমিটারস-এর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ। দেশটিতে এই মুর্হুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৫৩। মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ২২ হাজার ৬১০ জনের। আক্রান্তের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ১১ হাজার ৩৪৮। এর মধ্যে ৫১ হাজার ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ২৮০ জন। এর মধ্যে ৮ হাজার ২০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। সেখানে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯২ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৩০০ জনই সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় ৯ হাজার মানুষ। বর্তমানে দেশটিতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা মাত্র ৮ হাজার ৯৬১ জন।
এদিকে ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ছাঁড়িয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৭২৭ জন এবং মারা গেছেন ১৪ হাজার ১৫ জন।
প্রসঙ্গত গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগীশনাক্ত হন ৮ মার্চ এবং এ রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।
২৫ মার্চ প্রথমবারের মতো রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানায়, বাংলাদেশে সীমিত পরিসরে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সামাজিকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে।