আমাজনের জঙ্গলের মাত্র এক চা চামচ মাটিতেই সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮শ রকমের আনুবীক্ষনিক প্রাণের অস্তিত্ব আছে। এর মধ্যে কেবল ছত্রাকই আছে চারশো রকমের।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাজনের মাটির নীচে লুকিয়ে থাকা এসব আনুবীক্ষনিক প্রাণের মধ্য আছে আশ্চর্যজনক সব উপাদান, যা তারা মাত্রই আবিস্কার করতে শুরু করেছেন। খবর বিবিসি বাংলার
বিশ্বে আনুমানিক প্রায় ৩৮ লক্ষ রকমের ফাঙ্গি বা ছত্রাক আছে। এর বেশিরভাগেরই এখনো শ্রেণীবিন্যাস করা সম্ভব হয়নি।
ব্রাজিলের আমাজন জঙ্গল এই ছত্রাকের প্রাচুর্য আছে।
লন্ডনের কিউ বোটানিক্যাল গার্ডেনের বিজ্ঞান বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর আলেক্সান্ড্রে আন্তোনেলি বলেন, আমাজনের বনাঞ্চলকে রক্ষা করতে হলে এই ছত্রাকের ভূমিকাটা বোঝা খুব দরকার।
আপনি আমাজনের জঙ্গলের এক চা চামচ মাটি তুলে নিন, দেখবেন সেটিতে কত শত শত বা হাজার ধরণের প্রজাতির প্রাণের অস্তিত্ব আছে। জীববৈচিত্র্য বিষয়ক বিজ্ঞানের এক নতুন সীমানা কিন্তু এই ছত্রাক।
জীববৈচিত্র্যের তালিকায় ছত্রাক সাধারণত উপেক্ষিত, কারণ এগুলো সাধারণত মাটির নীচে লুকিয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন বিপন্ন প্রাণী এবং গাছপালার যে তালিকা তৈরি করেছে, সেখানে মাত্র একশো ধরণের ছত্রাকের মূল্যায়ন করা হয়েছে।
আমাজনের মাটিতে কত রকমের ছত্রাক আছে সেটা জানতে গবেষকরা সেখানকার মাটি সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালান।
জেনেটিক বিশ্লেষণ করে তারা দেখতে পেয়েছেন, সেখানে শত শত রকমের ছত্রাক আছে। এর কিছু আছে যেগুলো গাছপালার শেকড়ে থাকে। কিছু ছত্রাক খুবই বিরল। এগুলোর বেশিরভাগেরই এখনো কোন নাম রাখা হয়নি, কোন পরীক্ষা করা হয়নি।
জার্মানির ডুইসবার্গ-এসেন ইউনিভার্সিটির গবেষক ডঃ ক্যামিলা রিটার বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় জঙ্গলকে রক্ষা করতে হলে সেখানকার মাটির বৈচিত্র্য বোঝাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
মাটির পুষ্টি ঠিক রাখা এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ছত্রাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি খাদ্য এবং ঔষধেরও এক বড় উপাদান।
তবে কিছু ছত্রাক আবার খুবই বিপদজনক। বিশ্ব জুড়ে অনেক গাছপালা, ফসল ধ্বংসের কারণ। অ্যাম্ফিবিয়ান জাতীয় প্রাণীর বিলুপ্তির জন্যও ছত্রাককে দায়ী করা হয়।
আমাজনের মাটি নিয়ে এই গবেষণা চালিয়েছেন যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, জার্মানি, সুইডেন এবং এস্তোনিয়ার একদল গবেষক। তাদের গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ইকোলজি এন্ড ইভলিউশন জার্নালে।