করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঢাকায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিরোধিতা করে ইতালিপ্রবাসী এক বাংলাদেশি বলেছিলেন, ‘আই অ্যাম নট আ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী, আই অ্যাম ইতালিয়ান পাসপোর্টধারী’। তাঁর মতো বেশ কয়েকজন সেদিন ঢাকায় বাংলাদেশি পাসপোর্টকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যও করেন।
এরপর মাঝে কয়েক মাস বন্ধ থাকে ফ্লাইট। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইটে করে ইতালি ফেরার পর আবারও খবর ও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন কয়েকজন ইতালিপ্রবাসী। অভিযোগ উঠেছে, ইতালি ফিরেও তাঁদের কেউ কেউ কোয়ারেন্টান মানছেন না। তাঁদের পাশাপাশি দুর্নাম হচ্ছে বাংলাদেশি সম্প্রদায়েরও।
জানা গেছে, কয়েকজন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য লুকিয়ে ইতালিতে ঢোকার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে ইতালির গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে ফেরা ব্যক্তিদের মাধ্যমে অনেকে সংক্রমিত হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া করোনাভাইরাস সংক্রমিত এক প্রবাসী বাংলাদেশির মাধ্যমে তাঁর বাসার আরও চারজন সংক্রমিত হয়েছে। এ অবস্থায় বাধ্যতামূলক ‘হোম কোয়ারেন্টাইন’ মেনে না চলায় পুলিশ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়া করোনায় আক্রান্ত এক বাংলাদেশি রোমে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেছেন। কর্তৃপক্ষ এ ধরনের দুটি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে।
গত সোমবার ইতালিতে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এক পোস্টের শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘ইতালির রোম শহরে বাংলাদেশিদের আবাদকৃত করোনাভাইরাসের বাম্পার ফলন’। সেখানে আরো বলা হয়, গত সোমবার ইতালির রোম শহরের পর্তা ফুর্বার কাছে বাংলাদেশিদের এক বাসায় তিনজনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স এসে তিনজনকেই নিয়ে যায়। ওই তিনজনের মধ্যে একজন সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে করোনা পজিটিভ হয়ে ফিরেছেন এবং আরও দুজনকে সংক্রমিত করেছেন। ওই বাসায় আরও কিছু লোক ছিল। তারা বাসা থেকে বের হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। এরপর প্রশাসনের লোক এসে ওই বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এদিকে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস গত সোমবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ইতালি সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ‘রেসিডেন্সি পারমিটের’ ভিত্তিতে ইতালিতে ঢোকা যাবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ ‘রেসিডেন্সি পারমিটের’ ক্ষেত্রে ইতালিতে যাওয়ার আগেই ‘রি-এন্ট্রি ভিসা’ নিতে হবে।
বাংলাদেশ দূতাবাস আরও জানায়, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া সব যাত্রীকে ইতালি সরকারের স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। যারা এটি মানবেন না তাঁদের বিরুদ্ধে ইতালি সরকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।