ভূ-মধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে যাবার সময় লিবিয়া উপকূল থেকে বাংলাদেশীসহ ১৮০ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৫ জন অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু। জার্মানির একটি এনজিও সংস্থার পরিচালনায় ‘ওসেয়ান ভাইকিং’ নামে একটি জাহাজ এসব অভিবাসীদের উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত জাহাজ অভিবাসীদের নিয়ে সোমবার ইতালির দ্বীপাঞ্চল সিচিলিয়ার আগ্রিজেন্তো শহরের এমপেদোকল বন্দরে নোঙর করে। বর্তমানে এসব অভিবাসীদের আগ্রিজেন্তো শহরের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে দুই সপ্তাহের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ভূ-মধ্যসাগরের লিবিয়া উপকূল থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ঘানা, নাইজেরিয়াসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ১৮০ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়। তারা সবাই সমুদ্রপথে ছোটছোট নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। তাদের উদ্ধার করার পরপরই জাহাজটি ইতালিতে নোঙরের অনুমতি চায়, কিন্তু দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অনুমতি না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে যায় অভিবাসীরা। এসময় কয়েকজন অভিবাসী সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করে। পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোর হস্তক্ষেপে সোমবার সকালে জাহাজটিকে ইতালিতে নোঙর করার অনুমতি দেয় দেশটির প্রশাসন।
বাংলাদেশি যুবক রবিউল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইতালিতে আসতে পেরে আমরা খুবই খুশি। লিবিয়া আমাদের জন্য ছিল মরনফাঁদ। সেখানে জীবনের কোন নিশ্চয়তা নাই। ইতালির সরকার আমাদের নতুন জীবন ফিরিয়ে দেয়ায় দেশটির সরকারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি’।
প্রতিবছরের এই সময়ে সমুদ্রপথে লিবিয়া হয়ে কয়েক হাজার অভিবাসী ইতালি প্রবেশ করে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মতে, গতবছর প্রায় ১ লক্ষাধিক অভিবাসী ভূ-মধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে প্রবেশ করে। এছাড়াও একই বছরে প্রায় ১২’শ অভিবাসীর মৃত্যু হয় এই ভূ-মধ্যসাগরে। শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে আবহাওয়া ভালো থাকায় এসময় অনেক অভিবাসী এই পথে ইতালি যাবার চেষ্টা করে।
মানব পাচারকারি চক্রকে যদি আটক করে শাস্তির আওতায় না আনা যায় তাহলে এ মরণযাত্রা কখনোই থামানো সম্ভব না।