গার্মেন্টস শিল্পের শ্রমিকদের প্রায় ৮৪ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। শতভাগ রপ্তানীমুখী শিল্প সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত কেন্দ্রীয় তহবিল হতে এ অর্থ দেওয়া হয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এর সভাপতিত্বে আজ বুধবার (০৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় তহবিলের ১২তম বোর্ড সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়, বিকেএমইএ এর ১ম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিকেএমইএ এর সহ-সভাপতি মো. মোরশেদ সারোয়ার, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক -কর্মচারী লীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি, মহিলা শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (১) সৈয়দা খায়রুন নাহার তামরিন এবং বিজিএমইএ এর প্রতিনিধিসহ কেন্দ্রীয় তহবিলের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
২০১৬ সালের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত এ তহবিলে ২২৪ কোটি ১২ লাখ ৩৯ হাজার ৬’শ টাকা জমা হয়েছে। বর্তমানে এ তহবিলে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা জমা রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় তহবিলের মহাপরিচালক মো. আমীর হোসেন বোর্ডকে অবহিত করেন।
কেন্দ্রীয় তহবিল হতে এ পর্যন্ত গার্মেন্টস শিল্পের শ্রমিকদের ৮৩ কোটি ৭১ হাজার ৯৭২ টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯২০ জন মৃত শ্রমিকের স্বজনদের সহায়তা এবং মৃত্যু বীমাদাবী বাবদ ৭৮ কোটি ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ৬৮৫ জন অসুস্থ শ্রমিককে এক কোটি ৯৬ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা এবং শ্রমিকদের ৫৩৫ জন মেধাবী সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় এক কোটি ৭ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শুধু শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্প বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য শ্রম মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে গঠন করে। এ তহবিলটি একটি অনন্য তহবিল। পণ্য রপ্তানি মূল্যের ০.০৩ শতাংশ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি এ তহবিলে জমা হয়। রপ্তানি যত বাড়বে এ তহবিলে তত অর্থ জমা হবে। শ্রমিকদের আপদে বিপদে আরো বেশি সহায়তা প্রদান করতে পারবো।
শতভাগ রপ্তানীমুখী শিল্প সেক্টরের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ২৩২(৩) ধারার বিধান অনুযায়ী এ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘কেন্দ্রীয় তহবিল’ প্রতিষ্ঠা করে সরকার। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত কারণে অথবা পেশাগত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে অথবা কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ী অক্ষমতা ঘটলে সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী বা তার উত্তরাধিকারীদের সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা, দুর্ঘটনায় আহত এবং দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শ্রমিকের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা এবং শ্রমিকের মেধাবী সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্য সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, শ্রমিকদের বীমা বাবদ এবং বিভিন্ন সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধে মালিককে আপাতকালীন সহায়তার বিধান রয়েছে।