জাতীয় অনুভূতি’তে আঘাত হানার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রায়ত্ত দূরদর্শন ছাড়া ভারতীয় সব টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে নেপাল। তবে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানা হয়নি। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত ভারত সরকারও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
নেপালের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) মুখপাত্র নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ ভারতের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নেপাল সরকারের বিরুদ্ধে খবর প্রোপাগান্ডা চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব ভারতীয় টিভি চ্যানেলই বন্ধ হলো নেপালে।
দিল্লিতে নেপাল দূতাবাসের পক্ষ থেকে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সংবাদ নিয়ে দেশটির বক্তব্য ভারত সরকারকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নেপালে বিদেশি চ্যানেলগুলোর ডিস্ট্রিবিউটর মাল্টি-সিস্টেম অপারেটরের (এমএসও) চেয়ারম্যান দিনেশ সুবেদি গণমাধ্যমকে বলেন, দূরদর্শন ছাড়া আমরা ভারতীয় সব বেসরকারি নিউজ চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছি। তারা যেসব খবর সম্প্রচার করেছে, তা নেপালের জাতীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। এ কারণে এগুলো আর চালানো হবে না।
ঘটনার জের ধরেই নেপাল নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরগুলো নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছিলেন নেপালের রাজনীতিবিদরা। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি’র প্রধান উপদেষ্টা বিষ্ণু রামাল এ বিষয়ে বলেন, ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চরম আপত্তিজনক খবর প্রচার করা হচ্ছে।
নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ বলেন, ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর খবর সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। এই ছাইপাঁশ বন্ধ করা হোক।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে অবশ্য গত কয়েকদিন ধরেই চলছে তুমুল উত্তেজনা। নেপাল সংসদে গত ১৩ জুন দেশটির সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীতে দেশটির মানচিত্রেও সংশোধন আসে। নেপাল-ভারত সীমান্তের লিমপিয়াধুরা-কালাপানি-লিপুলেখ অঞ্চলগুলোকে এই মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এই এলাকাগুলো ভারত নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। এ ঘটনাতেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
দেশটির অর্থ, তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী যুবরাজ খতিভাদাও এসব খবরের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নেপাল সরকার এসব আচরণের নিন্দা জানায়। আমরা রাজনৈতিক ও আইনি উপায়ে এসব আপত্তিকর বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করব।’
শুধু রাজনীতিবিদরাই নন, খোদ নেপালে প্রধানমন্ত্রীই অভিযোগ করেছিলেন, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ভারতে বৈঠক হচ্ছে।