গতকাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ বিএসএফ এর হিন্দিতে দেয়া এক বিবৃতি প্রচার করা হয়। যেখানে বলা হয় “ভারত থেকে গরুপাচারে সায় দেয় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী, ‘এই গরুর মাংস ক্ষতিকর’ বিস্ফোরক দাবি বিএসএফ-এর” শিরোনামে সোমবার দুপুরে প্রকাশিত খবরে দাবি করেছে, বিএসএফ এর পক্ষ থেকে এই প্রথম ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গবাদিপশু পাচার নিয়ে সরকারি বক্তব্য দেওয়া হল। এই পশুপাচারকে ‘অমানবিক, নির্দয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহী’ কার্যকলাপ বলেও উল্লেখ করেছে বিএসএফ। তবে বিএসএফের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দাবি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এই পাচারকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানায়।
সামনে কুরবানির ঈদ। এজন্য গরু পাচার বাড়তে পারে। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএসএফ গত ৬ জুলাই দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে হিন্দি ভাষায় বিবৃতিটি দিয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, পাচার হওয়া প্রাণিদের চোখ বেঁধে দেওয়া হয় প্রথমে। এরপর তাদের কলাগাছের গুড়ির সঙ্গে বেঁধে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ভাসতে ভাসতে তারা বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছলে সেখানে কয়েকশো গবাদিপশু পাচারকারীরা দাঁড়িয়ে থাকে। পানি থেকে প্রাণিদের উঠিয়ে স্পিডবোটে করে নিয়ে চলে যায়। এই কাজটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেনাদের (সদস্য) সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতেই করা হয়।
বিএসএফ এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টেয়িয়ার-এর ডিআইজি এস এস গুলেরিয়ার স্বাক্ষরে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, প্রাণিগুলিকে পরম যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করা হয়। কিন্তু কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হল নির্যাতন করা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শারীরিক এবং মানসিকভাবে গবাদি পশুদের যেভাবে নির্যাতন করা, তাতে সেই মাংস খাওয়া উচিত নয় কখনই। কারণ ততক্ষণে প্রাণিটির দেহে ল্যাকটিক অ্যাসিডের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে এদের মাংসে অনেক ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াও জন্মায়। এজন্য যাঁরা এই মাংস খান তাঁদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
বিএসএফ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতে যে গরুর দাম ৫০ হাজার টাকা, ঈদের সময় বাংলাদেশে সেই গরু বিক্রি হয় দেড় লক্ষ টাকায়। প্রতিটি গরুর জন্য চোরাচালানকারীরা ১০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন বলেও দাবি করা হয়েছে, বিএসএফ এর এই বিবৃতিতে।
উল্লেখ্য, এর আগে ভারত-চীন উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশকে দেয়া চীনের শুল্কমুক্ত সুবিধাকে ‘খয়রাতি’ শব্দ ব্যবহার করে সংবাদ প্রকাশের পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যে সমালোচনার মুখে পড়েছিল; সেই ঘটনায় নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছিল আনন্দবাজার পত্রিকা।