প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ভার্চুয়ালে সপ্তাহে ৫ দিন মামলার শুনানি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। আগামী ১৯ জুলাই থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপিলে থাকা মামলার নিয়মিত কার্যতালিকা (কজলিস্ট) প্রকাশ করা হবে।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞা এ বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে প্রথমবারের মতো সোমবার (১৩ জুলাই) সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ভার্চুয়ালে মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। এরপরের দিনই সপ্তাহে ৫ দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ভার্চ্যুয়ালে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল কোর্টে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে (১টা ১৫ মিনিট) সোয়া একটা পর্যন্ত শুনানি গ্রহণ করা হবে।
প্রধান বিচারপতি দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে ও শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এবং অত্র কোর্ট কর্তৃক প্রণীত প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালিত হবে মর্মে অনুমোদন প্রদান করেছেন। এইসময় কোর্টের আপিল বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি চলাকালে গত ৯ মে আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। ফলে অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার সুযোগ তৈরি হয়।
গত ৯ জুলাই আইনে পরিণত হয়েছে। অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষেত্রে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের জন্য পৃথক প্রাকটিস ডাইরেকশন, আইনজীবীদের জন্য ভার্চুয়াল কোর্টরুম ব্যবহার ম্যানুয়াল, অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ভার্চ্যুয়াল শুনানি করতে বিশেষ প্রাকটিস নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়। প্রাকটিস ডাইরেকশনসহ ম্যানুয়ালে ব্যবহারিক দিক-নির্দেশনা রয়েছে।
অবস্থায় মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি এলো। এর মধ্য দিয়ে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে, যা দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম।
গত ১১ মে থেকে ভার্চ্যুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে হাইকোর্টের পৃথক ১৩টি বেঞ্চে এবং আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম চলে আসছে।