যত্রতত্র সেতু নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন এমন একটি পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, জন প্রতিনিধিরা সবাই ঘরে ঘরে সেতু চান। কিন্তু এতে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দুই দিক থেকেই ক্ষতি হয়। তাই এখন থেকে সেতু নির্মাণ প্রকল্প নেওয়ার আগে ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।
সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পসহ মোট ৮ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ১০ হাজার ১০২ কোটি ৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা দেবে ৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অনুমোদিত প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান
টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়ন অতি জরুরি। উৎপাদন খরচ কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর আওতায় দুর্গম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের জন্য সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ আরো সহজ ও টেকসই ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা। দেশের ৬৪ জেলার সব উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণে আরো সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এরই মধ্যে প্রকল্পের আওতায় নতুন গাড়ি কেনা স্থগিত করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় আপ্যায়ন, বিদেশ ভ্রমণ ও অন্য যেকোনো কেনাকাটায় সাশ্রয়ী হতে হবে। ইতোমধ্যে কিছু অর্থ সাশ্রয়ও হয়েছে। যেমন জুমের মাধ্যমে মিটিং হওয়ায় আপ্যায়নসহ অনেক খরচ কমে গেছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, জমির মালিকানা নিষ্কণ্টক হতে হবে। এ জন্য ভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা জরুরি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জমি সুরক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম, হাওর ও চরাঞ্চলসহ দেশের প্রত্যন্ত সব এলাকাতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেওয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন-ফেজ-১, তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প।
এছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন,পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়) এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন,রংপুর জোন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।