পাবনা বারে বহু বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবি আছেন যারা দেশের প্রচলিত আইন, মহামান্য হাইকোর্টের রুলিং ইত্যাদি দিয়ে মামলা পরিচালনা করে মক্কেলকে রিলিফ দিয়ে থাকেন।
কিন্তু এমন যদি হয় মক্কেলের সমস্যা প্রচলিত আইন বা রুলিং দিয়ে রিলিফ দেওয়ার সুযোগ নাই তখন সব বিধি বিধানের বাইরে নতুন মামলা সৃষ্টি করে মক্কেলকে রিলিফ দেওয়ার মত বিজ্ঞতা সম্পন্ন উকিল পাবনা বারে ২/১ জনই আছে।
বিএনপি নেতা মরহুম জাহিদের বাড়ী থেকে উচ্ছেদের প্রশাসনিক প্রচেষ্টা মোকাবেলার নিমিত্তে আইনগত সাহায্যের জন্য বহু নামী দামী উকিল কেউ কোন সুরাহা দিতে পারে নাই।
শেষ পর্যন্ত একজন আইনজীবি সব কিছু শুনে আদালতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে আদালত তা মন্জুর করেন এবং জাহিদ সে যাত্রা রক্ষা পায়। অথচ এ ধরনের বাস্তবতায় নতুন আঙ্গিকে মামলা সৃষ্টি করা যায় তা অনেক আইনজীবিরই মাথায় ছিল না।
গল্পটা আলোচনায় আনলাম ঈশ্বরদীর রাজনীতি বিশেষ করে বিএনপির রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
বিএনপি কেন্দ্র ঘোষিত বিশেষ বিশেষ দিবস যেমন, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস, দলের প্রতিষ্ঠা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়ার মৃত্যু বার্ষিকী কিংবা অন্যান্য দুই একটা দিবস পালনের জন্য টাকা পয়সা খরচ করে বিরাট মিছিল করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে রাজনৈতিক দায়িত্ব শেষ করে।
কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক ইউনিট হিসাবে স্থানীয় জনগনের প্রতি তাদের যে কিছু দায়দায়িত্ব আছে এবং তা পালন করা যে অবশ্য কর্তব্য যে বিষয়টা মনে করার মত নেতা ঈশ্বরদীতে কোথায়?
উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, গত ৬/৭/২০ তারিখে রুপপুর মোড়ের উচ্ছেদকৃত দোকানী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগন প্রেস ক্লাবের সামনে যে মানব বন্ধন করল সেখানে বিএনপির প্রতিনিধি হিসাবে দুই চারজন উপস্থিত হয়ে তাদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করা বা তাদের ন্যায় সঙ্গত দাবী মেনে নেওয়ার আহবান জানানো বা প্রয়োজনে তাদের পক্ষে পত্রিকায় বিবৃতি দেওয়া কি খুব কঠিন কাজ ছিল?
ঈশ্বরদী হাসপাতালে দীর্ঘ সাত আট বছর কোন স্বাস্থ্য সেবা নাই। রুগী আসলেই রিসিভ করে প্রাথমিক সেবা দিয়েই পাবনা অথবা রাজশাহীতে প্রেরন করা হয়।
এ যাবত সাপে কাটা রুগীর চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা করা যায় নাই। করোনা পরীক্ষার বিষয়ে লেজে গোবরে অবস্থা। সব কিছু মিলিয়ে জনগনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার দাবীতে শহরে অথবা শহরের বাহিরে মানব বন্ধন কর্মসুচীর আয়োজন অথবা অগত্যা একটি বিবৃতি দিতে পারতেন। অবশ্যই বিবৃতি দেওয়া যেত।
ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের বর্তমানের দলীয় করনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করা এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার কেন্দ্র হিসাবে পুর্বতন জায়গায় ফিরিয়ে নেবার জোর দাবী জানিয়ে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সহ এ ধরনের বহু ঘটনার কথা বলা যাবে।
ঈশ্বরদীর সন্তান নাফিস বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তির কৃতিত্ব অর্জন করেছে তাকে ছাত্রদলের দুই চার জন নেতা যেয়ে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন জানিয়ে ফেস বুক অথবা পত্রিকায় প্রকাশ করা কি খুব কঠিন ছিল? আসলে জাতীয় রাজনীতির কর্মসুচী প্রতিপালনের সংগে সংগে স্থানীয় জনগনের দাবী দাওয়া আদায়ে জনগনকে সংগে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলাই একজন প্রকৃত রাজনীতিকের মুল কাজ বা বৈশিষ্ট।
এ সব করলেই যে সরকার সব দাবী দাওয়া মেনে নেবে তা কিন্তু নয় তবে জনগনের মানুষ হিসাবে জনগনের পাশে থাকার প্রত্যয় ঘোষনাসহ দলের উপস্থিতি জানান দেওয়া হবে আর কর্মসুচী পালনের মাধ্যমে কর্মীরা সক্রিয় থাকবে।
এ ধরনের রাজনীতি সৃষ্টির উদাহরন যেমন কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আছে তেমনি ঈশ্বরদীতে আছে। এ সব কল্পনা প্রসুত নয় বরং বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকেই লেখা।
আসলে রাজনৈতিক কর্মসুচী সৃষ্টি করে রাজনীতি পরিচালনা করার কারনেই অনুবীক্ষন যন্ত্রের বিএনপি যেমন বিশাল দাপটের বিএনপি তেমনি সিরাজ ভাই এবং বাবলু জননেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।
যার স্বাক্ষী হিসাবে সর্বজনাব সিরাজ সরদার, আহসান হাবিব, আঃ রশিদ সহ দুই চার জন এখনও বেঁচে আছেন।
রাজনীতিবিদদের অনুপস্থিতি এবং বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা না থাকায় ঈশ্বরদীর বিএনপি নামক ইউনিটটি এক ধরনের রোবটে পরিনত হচ্ছে। এর পরিনতি খুব শুভ বলে মনে হচ্ছে না।