মালটায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. জসীম উদ্দিন ১৬ জুলাই মাল্টার রাষ্ট্রপতি ডক্টর জর্জ ভেল্লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে হাইকমিশনার মো. জসীম উদ্দিন মাল্টার রাষ্ট্রপতির কাছে আগামীতে দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের সম্ভাব্য রূপরেখা তুলে ধরেন। এ সময় তিনি মাল্টা ও বাংলাদেশের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনা এবং বাংলাদেশ মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন।
তারা করোনা মহামারির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় দু’দেশের সরকার কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচি সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করেন। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তথা কমনওয়েলথ ও আসেম এ দু’দেশের সহযোগিতার বিষয় ও আলোচনায় স্থান পায়।
আলোচনাকালে মাল্টার রাষ্ট্রপতি ডক্টর ভেল্লা দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার এবং অভিবাসন বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া, তিনি হাইকমিশনারের কাছে বাংলাদেশের সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চান এবং বিপুল জনসংখ্যা ও ঘন জনবসতির সত্ত্বেও করোনা মহামারির বিস্তার রোধ ও ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখতে বাংলাদেশ সরকারের ভুমিকার প্রশংসা করেন।
একই দিন সকালে হাই কমিশনার মো. জসীম উদ্দিন মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এভারিস্ট বারতোলোর সঙ্গে তার দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশেষত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাল্টা সফরকালে সৃষ্ট গতিময়তা ধরে রাখার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
হাই কমিশনার মো. জসীম উদ্দিন রোহিঙ্গা সমস্যার মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রতি মাল্টার অকুণ্ঠ সমর্থন এর জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং রোহিঙ্গা সুমস্যা সমাধানে বৈশ্বিক অঙ্গনে মায়ানমারের ওপর চাপ তৈরিতে মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমর্থন প্রত্যাশা করেন। জবাবে মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এভারিস্ট বারতোলো ভবিষ্যতেও এই বিষয়ে মাল্টার সক্রিয় সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে আশ্বাস দেন।
এছাড়া মাল্টার ভৌত অবকাঠামো ও পর্যটন শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসী শ্রমিকের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ হাইকমিশনার মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সেদেশে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও অর্ধদক্ষ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানান।
এ প্রসঙ্গে মালটার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং এই লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
হাইকমিশনার মো. জসীম উদ্দিন গত বছরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাল্টা সফরের প্রেক্ষিতে মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশে ফিরতি সফরের কথা উল্লেখ করে জানান, যে উক্ত সফরে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গি হতে পারেন, যার ফলে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সূচনা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশনার মাল্টা চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ডেবিড শুয়েরেবের সঙ্গে দুদেশের মধ্যকার বেবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন। এসময় হাই কমিশনার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মাল্টার ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রাথমিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। চেম্বার সভাপতি এই প্রস্তাবে সম্মতি জ্ঞাপন করে শিগিগরই একটি আলোচ্যসূচি প্রেরণের আশ্বাস দেন।