দেশে ৪৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এসব কেন্দ্র থেকে মোট ১৬ হাজার ৮৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (এমপি) বলেন, ‘নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে। মুজিববর্ষে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতিশ্রুতি এবং প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার অঙ্গীকার পূরণে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে।’
আমরা অদূর ভবিষ্যতে ১৯ হাজার ১শ’ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন আরো ১৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবেই উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এই প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এছাড়াও ২ হাজার ৭৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম আরো ১২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া, ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ছয়টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানায়, সরকার দেশে জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ-মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩ হাজার ৪৩৬ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। দেশে ৯৭ শতাংশ মানুষ এখন বিদ্যুতের আওতায় এসেছে।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে যৌথ উদ্যোগে ১০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, দ্বীপটিতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
এদিকে, পাবনার রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে।
২০৪১ সাল নাগাদ ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার ইতোমধ্যে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎসহ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা মোট ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে পাওয়ার লক্ষ্যে আমরা সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর জোর দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমরা ৬৩০.৯৬ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ পেতে সক্ষম হয়েছি।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে দেশে মোট ১১ হাজার ১১৯ সার্কিট কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন এবং ৫ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এছাড়াও ৫৮ লাখ সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে গ্রিড বহির্ভূত এলাকার বাসিন্দাদের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।