বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে এ বছর সৌদি আরবে বসবাসরত ১৬০টি দেশের অভিবাসী ও দেশটির নাগরিকদের সমন্বয়ে দশ হাজার মানুষ এবার হজ পালনের সুযোগ পাবেন। এর অংশ হিসাবে আজ থেকে প্রথম ধাপের ৭ দিনের কোয়ারেন্টাইন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে বলা চলে হজের আনুষ্ঠানিকতার প্রথম ধাপ শুরু হলো।
সৌদি কতৃপক্ষ জানায়, সাতদিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে ৩ জিলহজ মক্কায় প্রবেশ করে দ্বিতীয় দফায় আরও ৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন করবেন।
চলতি বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা স্বার্থে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ওই পদক্ষেপের আওতায় প্রত্যেক হজযাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন।
এসব সামগ্রীর বাইরে অন্য কিছু বহন করতে পারবে না হজযাত্রীরা। প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- একটি স্মার্ট ব্রেসলেট, দুই সেট ইহরামের কাপড়, ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, জামারাতে নিক্ষেপের জন্য জীবাণুমুক্ত কঙ্কর, জুতা, ফোনের চার্জার, জায়নামাজ, জুতার ব্যাগ, হাতব্যাগ এবং হজের বিধি-বিধানসহ প্রাসঙ্গিক বই-পত্র ও স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত হজ নির্দেশিকা।
যাতায়াতের জন্য প্রতি ২০ জন করে একটি দল করা হয়েছে। প্রত্যেক বাসে বিশজন করে হজযাত্রী চলাফেরা করবেন।
রবিবার ভোর থেকে মক্কার নির্দিষ্ট এলাকাসহ মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব স্থানে অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ প্রবেশ করলে তাকে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। এসব এলাকার পবেশ পথে কড়া নিরাপত্তা ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সড়কে টহল দিচ্ছেন। মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠিয়েছে।
এদিকে মিনা, জামারাত, মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে যে অংশ হাজিরা অবস্থান করবেন, সেসব স্থান জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। মসজিদের হারামের ভেতরে ও বাইরের অংশে নামাজের কাতারে নামাজের সময় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য স্টিকার লাগানো হয়েছে।
এবার হাজিরা মিনার তাঁবুতে থাকবেন না। মিনার নির্দিষ্ট ভবনগুলোতে তারা অবস্থান করবেন। এ ছাড়া তাওয়াফের সময় কাবা শরিফ স্পর্শ ও হাজরে আসওয়াদে চুমো দেওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে তাওয়াফ ও সায়ী সম্পন্ন করতে হবে। তাওয়াফের সময় দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। নামাজের জামাতেও দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে। সর্বাবস্থায় হজযাত্রীদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
হজযাত্রীরা বাইরে থেকে কোনোপ্রকার খাবার বা পানীয় নিয়ে হজের রীতিনীতি পালন করতে পারবেন না। সব হাজির জন্য খাবার ও পানি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করবে।
কোরবানি সম্পন্ন করতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। কোনো হজযাত্রী নিজে কোরবানির পশু ক্রয় কিংবা জবাই করতে পারবেন না। হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত পরিবহন শ্রমিক, খাবার সরবরাহকারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
হজযাত্রী ও হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা হবে। কারো মাঝে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাকে আইসোলেশনে পাঠানো হবে।
হারামাইন প্রেসিডেন্সি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবারের হজের খুতবা ৫ ভাষায় অনুবাদ করে সম্প্রচার করবে। ভাষাগুলো হলো- ইংরেজি, ইন্দোনেশিয়ান, উর্দু, ফ্রেঞ্চ ও ফারসি।