জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১ হাজার ১৩৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে ১ হাজার ২৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ১০৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে একনেক সভায় যুক্ত হন।
আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ২৩৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-ব্রিজিং’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প এলাকায় প্রস্তাবিত ভৌত কাজসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন, উপকূলীয় চর উন্নয়ন বিষয়ক উপাত্ত সংগ্রহ ও উপকূলীয় চর এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিরাপদ বসবাস স্থাপন ও তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা হবে। প্রকল্পটি নোয়াখালীর সুবর্ণচর, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটে বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমসমূহ হলো ১৭১ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, বিকল্প বাঁধ নির্মাণ, নদী তীর প্রতিরক্ষা ও ২৯৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ।
২৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান অপ্রশস্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন, রূপসা ব্রিজ অ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে খুলনা শহরে প্রবেশের জন্য স্বল্পতম দূরত্বের সড়ক নির্মাণ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যানজট হ্রাস করা হবে।
২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘লাঙ্গলবন্দ-কাইকারটেক-নবীগঞ্জ জেলা মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ হতে মিনারবাড়ী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় লাঙ্গলবন্দ-কাইকারটেক-নবীগঞ্জ জেলা মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ হতে মিনারবাড়ী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের মাধ্যমে নিরাপদ, আরামদায়ক, সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কুমিল্লা জেলার তিতাস ও হোমনা উপজেলায় তিতাস নদী (লোয়ার তিতাস) পুনঃখনন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভরাট হয়ে যাওয়া তিতাস নদী পুনঃখননের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নসহ জলাবদ্ধতা দূর করা হবে। এর পাশাপাশি অনাবাদী জমি আবাদযোগ্য করা, নৌ চলাচল সুবিধা সৃষ্টি, মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা হবে।
৪০১ কোটি টাকা ব্যয়ে গাইবান্ধা জেলার সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গোঘাট ও খানাবাড়ীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা যমুনা নদীর ডান তীরের ভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে গাইবান্ধা জেলার সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, বাজার, ফসলী জমিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা হবে।
১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী ও মৌসুমী পতিত জমি চাষের আওতায় এনে প্রকল্প এলাকার শস্যের গড় নিবিড়তা ২০৮ শতাংশ থেকে ২১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে। বিদ্যমান শস্য বিন্যাসে বিভিন্ন ফসল আবাদের মাধ্যমে বহুমুখী শস্য আবাদ এলাকা গড়ে তোলা হবে।