পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদ আদালতে প্রতারণায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
চারটি মামলায় মোট ২৮ দিন ও তিন মামলায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে ২১ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালত এই আদেশ দেন।
রিমান্ড শুনানি চলাকালে সাহেদ বিচারককে বলেন, স্যার আমি তো অপরাধ করেছি। আমি ও মাসুদ দুইজনই অপরাধী। আমার বিরুদ্ধে মামলার রিমান্ড শুনানি ঈদের পর হলে ভালো হয়। কয়দিন ধরে রিমান্ডে আছি। আমি অসুস্থ।
সকাল ১০টায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিমে তিন ও উত্তরা পূর্ব থানায় প্রতারণার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর ১০ দিন করে মোট ৪০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। এ সময় তাদের রাখা হয় আদালতের হাজত খানায়। পরে বেলা ১২টা ১০ মিনিটের দিকে সেখান থেকে পুলিশ পাহারায় একটি গাড়িতে করে বের করা হয়। এরপর শুনানির জন্য তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত হাজির করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করে সাহেদের পৃথক চারটি মামলায় ৭ দিন করে মোট ২৮ দিন ও মাসুদ পারভেজের তিন মামলায় ৭ দিন করে মোট ২১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১৬ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জসিসের আদালত সাহেদ ও মাসুদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, সাহেদ সব অন্যায় ও অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে। যারা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তাদের টাকা-পয়সা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে সাহেদ।
১৫ জুলাই সকালে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর বেইলি ব্রিজের পাশে নর্দমার মধ্যে থেকে বোরকা পরা অবস্থায় সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গত ১৪ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুরের কাপাসিয়ার একটি বাড়ি থেকে মাসুদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এদিকে মেট্রোরেল প্রকল্পে কর্মরত ৭৬ কর্মীকে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমান ১০ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলামের আদালত রিমান্ডের এই আদেশ দেন। গত শুক্রবার রাতে গোপালগঞ্জের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ৮ জুলাই এই আট আসামির মধ্যে তারেক শিবলী বাদে প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই দিন কামরুল ইসলাম নামের এক আসামি কিশোর হওয়ায় তাকে গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া তারেক শিবলীকে গত ১০ জুলাই প্রথম দফায় পাঁচ দিন ও গত ১৬ জুলাই দ্বিতীয় দফায় সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। এরপর রিমান্ড শেষে গত ২৪ জুলাই আদালতে হাজির করা হলে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালতে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় দণ্ডবিধির ৪০৬/৪১৭/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১/২৬৯ ধারায় মামলা দায়ের করে র্যাব। মামলায় হাসপাতালের মালিক সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়।