ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের রূপকল্পেই বাংলাদেশ ঠিক সময়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে যুক্ত হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ।
প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, গ্রন্থটির প্রকাশক জয়ীতা প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী সাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় ও প্রচ্ছদশিল্পী শাহরিয়ার খান বর্ণ এ সময় বক্তব্য রাখেন। গ্রন্থটির সম্পাদক কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অনলাইনে যোগ দেন।
দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার জন্মদিন উপলক্ষে ‘মুজিব থেকে সজীব’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনকালে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক অবৈতনিক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্পকার, যে ডিজিটাল বাংলাদেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অর্থাৎ দেশ-সমাজকে ডিজিটালাইজ করা, রোবটিক্স প্রযুক্তি প্রভৃতির প্রয়োগে যোগ দেবার জন্যেই জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। কারণ প্রথম তিন শিল্পবিপ্লবে আমরা যুক্ত হতে দেরি করেছি। প্রথম শিল্প বিপ্লব বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিস্কারের প্রায় ১০০ বছর পর, দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব বিদ্যুৎ আবিস্কারের বেশ কয়েক দশক পর এবং তৃতীয় শিল্প বিপ্লব কম্পিউটার আবিস্কারেরও বেশ পরে আমরা সেটির সাথে যুক্ত হয়েছিলাম।
প্রথম তিনটি শিল্প বিপ্লব আমাদের এই জনপদ পিছিয়ে থাকলেও, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্যপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতো আন্তর্জাতিকখ্যাতি সম্পন্ন প্রযুক্তিবিদ ও ভবিষ্যতদ্রষ্টার কাছ থেকে ধারণা আসার কারণে আমরা ঠিক সময়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছি বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ২০০৮ সালে এই ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণাটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রযুক্তিবিদ জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই এসেছিল এবং তার ধারণা প্রসূত এই ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে যখন দেয়, তখন অনেকেই এটি নিয়ে হাস্যরস করেছিল, অনেকেই এটি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ কোনো স্বপ্নের কথা নয়, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে।
আজকে যখন করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে আমরা আগের মতো চলাচল করতে পাচ্ছিনা, তখন ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা করা যে কত প্রয়োজন ছিল, সেটি আমরা অনুধাবন করতে পারছি। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাশ করছে, অনলাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য হচ্ছে, ই-ফাইলিং এর মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজ হচ্ছে। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ নাগরিকসেবা একেবারে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে।
ড. হাছান বলেন, তখন সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না, সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছিলাম। আর হেলেন ক্লার্ক নিউইয়র্কে গিয়ে তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘চর কুকরি-মুকরিতে যে রেজ্যুলেশন পেয়েছি তা অনেক সময় নিউইয়র্কেও পাওয়া যায় না, এমনভাবেই তখন থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের সেবা মানুষের কাছে পৌঁছেছে।’
এখন একজন পিতা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়া ছেলের কাছ থেকে টাকা পেয়ে যায়, শিক্ষার্থীরা এসএমএস করে, ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে তার কাছে পরীক্ষার ফলাফল চলে আসে, বাংলাদেশের শেষ প্রান্তে বসে কিম্বা বঙ্গোপসাগরের নির্জন দ্বীপ থেকেও একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে দরখাস্ত করতে পারে -এটিই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ, বর্ণনা করেন তথ্যমন্ত্রী।
সজীব ওয়াজেদ জয়কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, চার চারবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় এর ৫০তম জন্মদিনে আমি তাকে আমাদের সবার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তিনি সব শিক্ষার্থীর স্বপ্নের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইন্সে মাস্টার্স করা, উচ্চশিক্ষিত। তার নেতৃত্ব ও সঠিক দিকনির্দেশনা বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন। যেভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে, তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, ভবিষ্যতেও তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তার বক্তৃতায় সজীব ওয়াজেদের প্রতি জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয় যেমন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হিসেবে কাজ করেছেন, তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তেও একনিষ্ঠভাবে কাজ করে চলেছেন। আমরা তার সাথে রয়েছি।
‘মুজিব থেকে সজীব’ গ্রন্থের প্রকাশক, সম্পাদক ও প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জাকারসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জয়ীতা প্রকাশনী দু’টি বই প্রকাশ করার মধ্যদিয়ে এই জন্মদিনকে আরো অর্থবহ করেছে বলে আমি মনে করি।