রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে পশু সংকট দেখা দিয়েছে। বলতে গেলে হাটে মানুষের চেয়ে পশুর সংখ্যা কম। গতকাল রাত থেকে মহাসড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় গরুবাহী ট্রাকগুলো ঢাকায় ঢুকতে না পারাও গরু সংকটের কারণ বলে জানান বিক্রেতারা। ফলে গত কয়েকদিন ধরে সস্তা থাকা গরু-ছাগলের দাম হঠাৎ করেই অনেকটা বেড়ে গেছে।
শুক্রবার সকাল থেকে কোরবানির পশু কিনতে যারা হাটে গেছেন তাদের অনেকেই এক হাট থেকে আরেক হাটে ঘুরছেন। কেউ আবার চড়া দামেই পছন্দের গরু কিনে বাড়ি ফিরছেন বলে অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার হাটে অনেক গরু দেখেছেন। কিন্তু কেনেননি। শুক্রবার ফজরের নামাজ পড়ে গরু কিনতে রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠের হাটে গিয়ে দেখেন গরু নেই। অনেকেই হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। বিশাল আকারের মাঠের ৯৮ শতাংশ ফাঁকা পড়ে আছে। হাটের ভলান্টিয়ার, হাসিল আদায়কারীরা অলস সময় পার করছেন।
হাটে শত শত মানুষ, কিন্তু গরু আছে হাতে গোনা কয়েকটি। একই অবস্থা রাজধানীর সবচেয়ে বড় হাট গাবতলীতে। সেখানেও গরুর চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা বেশি।
কোরবানির পশুর হাটে এমন সংকট কখনও দেখিনি। সবসময় ঈদের আগের দিন গরুর সংকট অথবা পশুর সরবরাহ বেশি দেখা যায়। কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র। ঈদের দুইদিন আগেই রাজধানীর হাটে পশুর সংকট সৃষ্টি হয় এমন ঘটনা বিরল। বড় কিছু গরু আছে কিন্তু ছোট গরু একেবারেই নেই। গরু ট্রাক থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপারীরা কিনে নিচ্ছেন, সাধারণ ক্রেতাদের ভিড়তেই দিচ্ছেন না।
গরু কম, দাম অনেক চড়া। যে গরুর দাম ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা সেই গরুর দাম চাচ্ছে এক লাখ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। বাজার দেখছি গরু পছন্দ ও দামে বনলে কিনব।
শুক্রবার ভোরে গাবতলীর হাটে গরু কিনতে গিয়ে চমকে যান আদাবরের বাসিন্দা মনজুর হাসান নিজামী। হাটের শতকরা ৭০ ভাগ শেডই খালি, কোনো গরু নেই। বাকি ৩০ ভাগ শেডে গরু থাকলেও সেখানে ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর সংকট ছিল। পরে হাটের বাইরে নদীর পাড় থেকে ৭১ হাজার টাকায় একটি ছোট গরু কিনে দুপুরে বাড়ি ফেরেন।
বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় গরুর সরবরাহ কমে গেছে। গত রাত থেকে মহাসড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় গরুবাহী ট্রাকগুলো ঢাকায় ঢুকতে না পারাও গরু সংকটের কারণ বলে জানান তারা।
বড় গরুর তুলনায় ছোট গরুর চাহিদা বেশি। দুই থেকে তিন মণ ওজনের গরু ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব গরুর ক্রেতা বেশি। বড় আকারের গরু তুলনামূলক কম বিক্রি হচ্ছে।