বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো ফেলে দিয়ে ল্যাপটপে করোনার ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করতেন আরিফুল হক চৌধুরী। এই জালিয়াতির কাজে তাঁকে যোগাযোগ ও কৌশলগত সহায়তা করতেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার (সাময়িক বরখাস্ত) ডা. সাবরিনা চৌধুরী।
ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জালিয়াতিতে সক্রিয় ছিলেন জেকেজি হেলথকেয়ারের আরো ছয় কর্মকর্তা।
আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা। করোনা পরীক্ষার নামে প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পুলিশের প্রায় দেড় মাসের তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার আলোচিত এই মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের আহ্বায়ক ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের নামে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
এই আসামিদের বিরুদ্ধে আরো তিনটি মামলা তদন্তাধীন। আরিফ ও সাবরিনার আরো কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হলেও ভুয়া রিপোর্ট তৈরির সঙ্গে সরাসরি তাঁদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
তাঁদের ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত করা হয়নি। এই মামলায় আরিফুল ও সাবরিনাকে সহযোগিতা করায় সংশ্লিষ্ট ছয় কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে বলে জানায় ডিবির সূত্র।
২৩ জুন ডা. সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও পুলিশ। পরের দিন ২৪ জুন আরিফ ও সহযোগী সাঈদ চৌধুরীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে গত ১৫ জুলাই আরিফুলের ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
১২ জুলাই সাবরিনাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপপুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গত ১৩ জুলাই তাঁকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ১৭ জুলাই আরো দুই দিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি। দুই দফা রিমান্ড শেষে ২০ জুলাই তাঁকে কারাগারে পাঠান আদালত। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জেকেজি হেলথকেয়ার ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দিয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যা জব্দ করা ল্যাপটপে পাওয়া গেছে।