ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের অন্যন্য এক ছোয়া লেগেছে সিলেটে। দেশের প্রথম ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। উন্নত দেশের আদলে রাস্তার দুপাশ থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কাজ দেশের প্রথম হচ্ছে সিলেটে।
ফলে জঞ্জালমুক্ত লাইনবিহীন সড়ক হয়েছে সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার গেইট এলাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম। সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় এমন দৃষ্টান্তমূলক কাজ করতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছি। এজন্য সরকার ও নগরবাসী এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এমপি’র কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি তাঁদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। পর্যায়ক্রমে নগরকে জঞ্জালমুক্ত নগর হিসেবে গড়ে তুলবেন বলে জানিয়েছেন সিসিক মেয়র আরিফ।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ করে ভু-গর্ভস্থ বৈদ্যুতিক লাইন চালু করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিসিকের ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা ও শাহজালাল দরগাহ এলাকার ব্যবসায়ীবৃন্দ।
তারের জঞ্জাল কমিয়ে নগরীকে একটি স্মার্ট ডিজিটাল সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে একধাপ এগিয়ে নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। সেই সাথে ওই এলাকার বিদ্যুতের খুঁটিসহ অন্যান্য সার্ভিস লাইনের তারও অপসারণ করা হয়। ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন চালুর মাধম্যেই সিলেট নগর থেকে তারের জঞ্জাল সরার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে আরও বলেন, হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকা থেকে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের সফল সরবরাহ চালু হয়েছে। উন্নত রাষ্ট্রের আদলে দেশের প্রথম ভূ গর্ভে বিদ্যুৎ লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তুলে নেয়া হচ্ছে রাস্তার দুপাশের বিদ্যুতের খুঁটি ও অন্যান্য সার্ভিসেস লাইনের তার। ফলে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত হয়েছে শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকা। বেড়েছে এই এলাকার সৌন্দর্য।
মেয়র বলেন, গত ১৫-২০ দিন ধরে পরীক্ষামূলক সরবরাহ পর্যবেক্ষণের পর আজ থেকে পূর্ণ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। শাহজালাল মাজার এলাকা থেকে কোর্ট পয়েন্ট পর্যন্ত পাইলট প্রকল্পে ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুতের লাইন চালু করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সব এলাকায় বাস্তবায়ন করা হবে এই সুবিধা।
মেয়র আরও বলেন, এখন থেকে কোন ব্যক্তি বা সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বিভাগ ও সিটি করপোরেশনকে অবিহিত না করে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন গিয়েছে এমন রাস্তা খুঁড়াখুঁড়ি করতে পারবেন না। যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখা যায় তার জন্য সকলের সহযোগিতা চাই।
সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. নূর আজিজুর রহমান বলেন, ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন চালু করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। যা অত্যন্ত সফলতার সাথে বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় সম্পন্ন করতে পেরেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে বিদ্যুৎ বিভাগকে সার্বক্ষণিক নজরদারী রাখতে হবে। এর জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ও সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পাইলট প্রকল্পে নগরে ১১ কেভি ২৫ কিলোমিটার, শূন্য দশমিক ৪ কেভি ১৮ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ২ সার্কিট কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে। নগরের ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার বিদ্যুৎ সাব স্টেশন কেন্দ্র থেকে ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন আম্বরখানা হয়ে যাবে চৌহাট্টায়। চৌহাট্টা থেকে একটি লাইন যাবে নগরের জিন্দাবাজার-কোর্ট পয়েন্টে হয়ে সিলেট সার্কিট হাউজ পর্যন্ত। আরেকটি লাইন চৌহাট্টা থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত যাবে।