সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার মামলায় টেকনাফ থানার ওসি (প্রত্যাহারকৃত) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলিসহ সাত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপরই র্যাবের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর এর আবেদনের শুনানি শেষে আদালত উক।ত সাত জনকে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে এই সাত পুলিশ সদস্য আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করলে আদালত উক্ত আাদেশগুলো দেন।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যার মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা হলেন, টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ (৪৮), বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলী (৩১), উপপরিদর্শক নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, সহাকারী উপপরিদর্শক লিটন মিয়া, উপপরিদর্শক টুটুল ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা।
এদের মধ্যে দুই অভিযুক্ত উপপরিদর্শক টুটুল ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা এখনও পলাতক বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম।
এদিন বিকেল ৫টার দিকে প্রদীপকে নিয়ে পুলিশ চট্টগ্রামে থেকে কক্সবাজারের বিচারিক হাকিম আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছায়। তার আগেই বিকাল পৌনে ৪টার দিকে পরিদর্শক লিয়াকতসহ বাকি সাতজনকে কক্সবাজার পুলিশ লাইন্স থেকে আদালতে নেয়া হয়। আদালতে আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতা এবং অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের হস্তান্তর করা হবে র্যাবের হাতে। র্যাবকেই এ মামলার তদন্তভার দিয়েছে আদালত।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে প্রদীপ কুমার দাসকে হেফাজতে নেয়ার পর পুলিশের বিশেষ শাখার একটি গাড়িতে করে তাকে আদালতে দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতে তার আত্মসমর্পণ করার কথা রয়েছে বলেও নির্ভরযোগ্য এই সূত্রটি জানায়।
আটকের বিষয়টি স্বীকার না করলেও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান জানান, হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য পুলিশ পাহারায় তাকে আদালতে নেয়া হচ্ছে।
প্রদীপ কুমার দাশ ২০১৯ সালে পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) পান। এর আগে একাধিকবার রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন তিনি। ১৯৯৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে উপপরিদর্শক যোগ দেয়া প্রদীপ পদোন্নতি পেয়ে ২০১৮ সালে ওসি হিসেবে টেকনাফ থানায় যোগদেন। এরপর একের পর এক কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে টেকনাফে। সে সময় থেকেই এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ মডেল থানায় নিয়মিত হত্যা মামলা দায়ের হওয়ার পরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। মামলা নম্বর সিআর: ৯৪/২০২০ (টেকনাফ)। দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে।