আমরা অনেক দিন ধরে বলে আসছিলাম, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে শুধু যারা সামনে থেকে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের মাধ্যমেই যে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা নয়। সদ্যঃস্বাধীন একটি দেশকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল।
যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, সেই দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পটভূমি রচনা করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে আয়োজিত তিন দিন ব্যাপী সভার সূচনা দিনের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যদি সেটি আমরা আজকে না করি, তাহলে আজ থেকে শতবর্ষ পরে যে ইতিহাস লেখা হবে, সেখানে কুশীলবদের নাম থাকবে না, কারা এই ষড়যন্ত্র করেছিল। তাদের সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রজন্ম জানতে পারবে না, পৃথিবীর ইতিহাস সেটি জানতে পারবে না।
ইতিহাসে যাতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের নাম লিপিবদ্ধ থাকে, ইতিহাসকে সত্য জানাতে হয়, সে জন্য এবং ইতিহাসের সত্য উদ্ঘাটনের স্বার্থে এবং ভবিষ্যতের জন্য ঠিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার প্রয়োজনে আমি মনে করি, আপনারা মনে করেন, দেশের মানুষ মনে করে-হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচনের স্বার্থে একটি কমিশন করা এবং যারা জীবিত আছে, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন ।
এটি না হলে ইতিহাসের কাঠগড়ায় হয়তো আমাদেরকে দাঁড় করানো হতে পারে, সে জন্যই এটি করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি দেশ রচনা করে গেছেন তা নয়। বঙ্গবন্ধুকে আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বলি, কারণ বাঙালির হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই বাঙালিরা স্বাধীনতাসংগ্রামের মাধ্যমে, স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালিদের জন্য একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বঙ্গবন্ধু এই জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। এ জন্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
বঙ্গবন্ধু শুধু এই স্বাধীন রাষ্ট্র রচনা করে গেছেন তা নয়, বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরের মাথায় একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়ে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই তাঁকে হত্যা করা হয়।
সদ্যঃস্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশ যাতে ভবিষ্যতে মাথা উঁচু করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে, সে জন্য বঙ্গবন্ধু অনেক আইন করেছিলেন এবং সেসব আইনের ভিত্তিতেই আমরা পরবর্তীকালে সমুদ্রসীমা, স্থলসীমা, তেল-গ্যাসের ক্ষেত্রে নিজেদের অধিকারসহ অনেক কিছু অর্জন করেছি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৪ শতাংশ এবং তখন বাংলাদেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল, অনেক পরিসংখ্যান মতে, সে বছর ১০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল, বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সাজ্জাদ আলম খান তপুর সঞ্চালনায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বিএফইউজের মহাসচিব শাবান মাহমুদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, ওমর ফারুক, কাজী রফিক, আজিজুল ইসলাম ভূ্ঁইয়া, রফিকুল ইসলাম রতন, সোহেল হায়দার চৌধুরী, মানিকলাল ঘোষ প্রমুখ সভায় বক্তৃতা করেন।