সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বোধোদয় হয়েছে যে কখন কি ঘটে যায় বলা মুশকিল। তিনি তাদের নেতাকর্মীদের সাবধান হতে বলেছেন।
ওবায়দুল কাদের সাহেব, ১২ বছর পার হয়ে গেল এর মধ্যে বরকতের টাকা পাচার হলো, এরমধ্যে ফরিদপুরের ছাত্রলীগের সভাপতির টাকা পাচার হলো, এরমধ্যে করোনা পরীক্ষার নকল সনদপত্র দেওয়া হলো, রিজেন্ট-জিকেজির মতো ভুয়া হাসপাতালে ভুয়া সনদপত্র দেওয়া হলো, এই কথাগুলো আগে বলেননি কেন? আজকে আপনাদের দলের যে সিন্দুক সেই সিন্দুক খুলে কেন আমরা সম্রাটকে দেখছি? কেন আমরা খালেদ-শামীমকে দেখছি? এই কথাগুলো যদি আগে বলতেন এবং তা সত্যি সত্যি প্রয়োগ করতেন তাহলে আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
আপনার পুলিশ বাহিনী আছে অস্ত্র আছে, কিন্তু জনগণ আপনার নেই। এই যে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতা এটা কেন হয়েছে? আপনারা ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন থেকে এসব কথা বললেই নেতাকর্মীরা অনেকটা সতর্ক থাকতো।
আপনারা আশকারা দিয়েছেন। আপনাদের এমপি বলেছে, তোমরা নিজেরা নিজেরা গন্ডগোল করো, বাড়িতে বাড়িতে যেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করতে পারো না। ডিআরইউতে আপনাদের আরেকজনের বলেছে, ‘তোমরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করো, ছাত্রদল-বিএনপি কর্মীদের সাথে পারো না।
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে ছাত্রদল মুন্নিজান হল শাখার সাবেক সভানেত্রী দিলরুবা শওকত এর রুহের মাগফিরাত কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের হত্যার উস্কানি দিয়েছেন এবং আপনাদের সেই উস্কানিতে ছাত্রলীগ বিশ্বজিতের মতো এক কিশোর শ্রমিককে হত্যা করেছে।
সেদিন আপনি ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক না হন, বড় নেতাই তো ছিলেন। আপনার বিবেক তখন নাড়া দেয়নি? ইলিয়াস আলীর মতো একজন সাবেক এমপিকে গুম করে দেয়া হল, আপনার বিবেক নাড়া দেয়নি? কে গুম করছে, আপনি তো জানেন।
আরো বলেন, আমরা একটি ভয়ঙ্কর অসুস্থ পরিবেশের মধ্যে আছি। সুস্থ গণতন্ত্র নেই বলে আমাদের নানাভাবে নানা কৌশলে কথাগুলো বলতে হচ্ছে। কথার মধ্যে যদি কোনও ব্যত্যয় ঘটে তবে নিস্তার নেই। ডিজিটাল আইন আছে, সরকারের অনেক অস্ত্র আছে।
মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা এটি একটি অস্ত্র, নানা ধরনের গালাগালি এটি একটি অস্ত্র, ডিজিটাল আইন এটি একটি অস্ত্র। এরপর আরও বড় অস্ত্র আছে বিচারবহির্ভূত হত্যা। এগুলো সব সরকারের হাতে।
প্রয়োজনে বিরোধীদলের কণ্ঠকে রুদ্ধ করার জন্য, মিছিল বন্ধ করার জন্য, রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করার জন্য সরকারের যখন যে অস্ত্র ব্যবহার করা দরকার সেই অস্ত্র তারা নির্বিঘ্নে ব্যবহার করছে।
আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ ও এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।