৩৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বহুল আলোচিত অফিস সহকারী আবজাল হোসেনকে ১৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এই আদেশ দেন।
কারাগার থেকে আবজালকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলায় মোট ২০ দিনের রিমান্ড শুনানি শুরু হয়।
এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুটি মামলায় সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২৬ আগস্ট আবজালকে দুটি মামলায় ১০ দিন করে মোট ২০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে আদালত আগামী ২ সেপ্টেম্বর তার উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এছাড়া একই দিন আবজাল হোসেন আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০১৯ সালের ২৭ জুন দুদক উপ-পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ কার্যালয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন, মানি লন্ডারিং এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে দু’টি মামলা করেন।
আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে ৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৬১ হাজার ৪৯৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় দীর্ঘ সময় ধরে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে ২৮৪ কোটি ৫১ লাখ ১৩ হাজার ২০৭ টাকার অর্থপাচার অপরাধের অভিযোগও করা হয়।
মামলায় চার কোটি ৭৯ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি দুদকে পেশ করা সম্পদ বিবরণীতে দুই কোটি এক লাখ ১৯ হাজার ৭৮৫ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।
আবজাল ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমকে যৌথভাবে আসামি করে করা মামলায় ৩১ কোটি ৫১ লাখ ২৩ হাজার ৪৪ টাকার সম্পদের কথা বলা হয়েছে। তিনি দুদকের কাছে পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৯২৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আবজালের নামে থাকা সম্পদের চেয়ে তার স্ত্রীর নামে সম্পদের পরিমাণ বেশি। অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে তিনি স্ত্রীর নামে সম্পদ করেছেন।
এসব সম্পদের বৈধ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এজাহারে আবজালের নামে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার ৩২ টাকার অর্থপাচার অপরাধের প্রমাণ মিলেছে।
তার স্ত্রী রুবিনা খানমের বিরুদ্ধে ২৬৩ কোটি ৭৬ লাখ ৮১ হাজার ১৭৫ টাকার অর্থ পাচার অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে।