বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণেই জিয়াউর রহমান খুনিদের দায়মুক্তির ব্যবস্থা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর যৌথসভায় একথা বলেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল ফারুক, রশিদ, মাজেদরা মিডিয়ায় নিজেদের সাক্ষাৎকারে বলেছে।
জড়িত ছিল বলেই খুনিদের পুনর্বাসনের জন্য ও বিচারকার্য বাধাগ্রস্ত করতে জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংবিধানে পাশ কারে দায়মুক্তির বিধান করে। আমরা বুঝতে পারি না, ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পরীক্ষিত এই সত্যকে বিএনপি অস্বীকার করে কীভাবে?
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীতে থাকা খালেদ মোশাররফ, কর্নেল হুদা, হায়দারসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ও সৈনিককে নির্মমভাবে হত্যা করে।
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রাণ ভোমরাকে আবদ্ধ করে সামরিক ছায়ায় হ্যাঁ-না ভোটের ক্যানভাসে ১১০ ভাগ ভোটও জিয়াউর রহমান সেদিন পেয়েছিলেন। এটাই হচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্রের নমুনা।
এই খুনিদের কারা নিরাপদে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল? কারা বাংলাদেশের বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল? যাতে খুনিদের বিচার না হয় সেজন্য মোশতাকের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছিল কে? এর জবাব আপনাদের দিতে হবে।
ইতিহাসের সত্যকে আপনাদের ভালো লাগে না। তবে একটা কথাই সত্য যে, সত্য জাতির কাছে চাপা দিয়ে কারো কোনো লাভ নেই। জিয়াউর রহমানের এই ভুমিকাকে ১৫ আগস্টের খুনিদের এসব সুবিধা কে দিয়েছিল? বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম এই জবাব চায়।
খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে হত্যা ও বিচারহীনতার রাজনীতি পরিপুষ্ট হয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টে ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার নীলনকশা করে হাওয়া ভবনে তারেক রহমান।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল এদেশের রাজনৈতিক সম্প্রীতি নষ্টের সর্বশেষ সংযোজন। আমি বলবো ১৫ আগস্ট হত্যকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এদেশের রাজনৈতিক যে বন্ধন সেখানে উঁচু দেয়াল বিএনপি তুলেছিল, ২১ আগস্টের হামলার মধ্য দিয়ে তা আরো উঁচুতে উঠে যায়- এটাই সত্য।
আওয়ামী লীগের যে সকল জেলা, মহানগর এবং সহযোগী সংগঠগুলোর সম্মেলন হয়েছে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, তাদের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়ার নির্দেশ দেন সাধারণ সম্পাদক।
এরপর যে সম্মেলনগুলো হবে সেগুলো সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেই করব। উপজেলা সম্মেলন, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড বাদ দিয়ে জেলা সম্মেলন করার কোনো মানে হয় না। কাজেই আমাদের একেবারেই তৃণমূল থেকে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। খুব শিগগিরই দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভা হবে। এরপর কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং করার চিন্তা-ভাবনা আছে।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগটনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামল হোসেন, মির্জা আজম প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।