বাসায় ঢুকে দুষ্কৃতকারীদের হামলার শিকার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের পুরোপুরি জ্ঞান ফিরে এসেছে।
তিনি এখন অনেকটাই ভালো আছেন। ইতিমধ্যে চিকিৎসক ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথাও বলেছেন। তবে কে বা কারা তাঁর ওপর হামলা করেছে এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলতে পারছেন না। এমনটিই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার রাতে মস্তিষ্কে জটিল অপারেশন পরিচালনা করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন ও তাঁর টিম।
তাঁর মাথায় ৯টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। আঘাতগুলো হ্যামার (হাতুড়ি) জাতীয় কিছু দিয়ে হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, মস্তিষ্কের যে অংশ দিয়ে ডান সাইড নাড়াচাড়া করা হয়, সেই অংশটিতে চাপ পড়েছে বেশি। মাথার খুলি ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে ঢুকে এই চাপ পড়ায় এমনটা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা অপারেশন করে সে চাপটা কিছুটা তুলে এনেছি, তবে কিছুটা ড্যামেজ হয়েছে।
তাঁকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে কি না তা বলা মুশকিল। তবে ৭২ ঘণ্টা পার হলে অনেকটাই হয়তো শঙ্কামুক্ত বলা যাবে।
চিকিৎসার খোঁজ রাখছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রাজিউল হক।
তিনি বলেন, আমি সকালে দেখে এসেছি। তিনি কিছুটা নড়াচড়া করতে পারছেন তাই রিকভারির চান্স আছে। তবে ব্রেইন যতটুকু ড্যামেজ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল সিটি স্কিন রিপোর্টে এরকম কিছু নেই। অর্থাৎ তার সিটিস্ক্যান রিপোর্ট ভালো।
তিনি বলেন, মস্তিস্কে হাড় ভেঙে দেবে ছিল বলে তার দুর্বলতা ছিলে, তবে মস্তিষ্ক ততটা থেঁতলানো নয়। ফলে রিকভারির ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।
ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল। তবে সেটাকে ভালো বলা যাবে না। ভালো বলার প্যারামিটার আসলে আলাদা। তবে অপারেশনের পরবর্তী পর্যায়ে এখন পর্যন্ত ডেটোরেট (অবনতি) হয়নি, একই জায়গায় আছে।
অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, মাথায় মারাত্মক আঘাত তিনি পেয়েছেন। বিষয়টা অনেক জটিল, অনেক কমপ্লিকেটেড। তবে সঠিক সময়ে ঢাকায় এনে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ায় কিছুটা ভালো হয়েছে।
তিনি বলেন, তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। পরবর্তী চিকিৎসা বাংলাদেশেই সম্ভব।
শনিবার সকালে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার পরবর্তী আপডেট জানাবেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসকরা।