ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তির মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় আরো ছয় মাস বৃদ্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নজিরবিহীন মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন।
অপর দিকে ধন্যবাদের সংস্কৃতি লালন করে না বলে বিএনপি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতেও ব্যর্থ হয়েছে।
শনিবার ঢাকায় তথ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে টেলিভিশন শিল্পী-কলাকুশলীদের বিভিন্ন সংগঠনের জোট ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের সদ্যঃপ্রয়াত সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মসজিদে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
ড. হাছান প্রয়াতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
বেগম জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ালেও বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ধন্যবাদ জানানো হয়নি- এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নজিরবিহীনভাবে একজন শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি (খালেদা জিয়া), যিনি ১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত, তা-ও এতিমের টাকা আত্মসাতের কারণে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত, তাঁকে নজিরবিহীনভাবে দণ্ডবিধির ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে মুক্তি দিয়েছেন।
ছয় মাসের জন্য প্রাথমিকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, পরে আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।
সিআরপিসির (দণ্ডবিধি) ৪০১ ধারায় যে প্রদত্ত ক্ষমতা, সেটা প্রধানমন্ত্রী প্রয়োগ করেছেন। এতে বিএনপির ধন্যবাদ জানানোর প্রয়োজন ছিল।
কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বিএনপি ধন্যবাদ জানানোর সংস্কৃতিটা লালন করে না। এ জন্য তারা ধন্যবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।
মন্ত্রী এ সময় বলেন, বিএনপির কাছে আমার প্রশ্ন- এই পরিস্থিতি যদি উল্টোভাবে ভাবি, খালেদা জিয়া যদি প্রধানমন্ত্রী থাকতেন, তিনি কি শেখ হাসিনার জন্য এই ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন? আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, করতেন না।
কারণ যিনি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করার জন্য, হত্যাকারীদের উৎসাহিত করার জন্য নিজের জন্মের তারিখটাই বদলে দিয়ে ১৫ আগস্ট কেক কাটেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর দরজায় গিয়ে ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরও দরজা খোলেননি, যাঁর জ্ঞাতসারে তাঁর পুত্র ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলা চালায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব কিছু ভুলে তাঁকে এই মহানুভবতা দেখিয়েছেন, এটি নজিরবিহীন।
হাছান মাহমুদ বলেন, টিআরপি ব্যবস্থাকে নিয়ম-নীতির মধ্যে আনতে তিন মাস আগে থেকে তথ্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে।
আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এই কমিটি সুপারিশ করবে, কিভাবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে এবং অন্যান্য দেশে যেভাবে টিআরপি নির্ধারণ করা হয়, সেই পদ্ধতিতে আমাদের দেশে কিভাবে টিআরপি নির্ধারণ করা যায়।
এফটিপিও আহ্বায়ক নাট্যকার মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে সংগঠনের শীর্ষনেতাদের মধ্যে সালাহউদ্দীন লাভলু, আহসান হাবিব নাসিম, এজাজ মুন্না, এস এ হক অলীক, সাজু খাদেম, ইরেশ যাকের, গাজী রাকায়েত এবং আনজাম মাসুদ বৈঠকে অংশ নেন।
বিদেশি দ্বিতীয় শ্রেণির শিল্পী-কলাকুশলীদের দিয়ে বাংলাদেশের পণ্যের বিজ্ঞাপন বানিয়ে প্রদর্শন করাতে বাংলাদেশের শিল্পীরা বঞ্চিত হয়, শিল্প বঞ্চিত হয়। আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা, যারা অভিনয় করে, বিজ্ঞাপনে মডেল হয়, তারা অনেক স্মার্ট, দেখতেও সুন্দর।
কিন্তু এর পরও কোনো কোনো বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রবণতা থাকে আশপাশের দেশ থেকে এগুলো বানিয়ে আনার। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সেটি আমরা বন্ধ করব না; কিন্তু একটি নিয়ম-নীতির আওতায় আনা হবে।
শিল্পীদের জন্য শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আছে, সেই কল্যাণ ট্রাস্ট সবার জন্য। টেলিভিশন, মঞ্চ, যাত্রার জন্য তো আলাদা আলাদা শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করা যাবে না। শিল্পীদের জন্য একটি শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আছে। সেটি পরিচালনার দায়িত্ব সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের।
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্রশিল্পীদের জন্য চলচ্চিত্রশিল্পী ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এই দুই ট্রাস্ট থেকে টেলিভিশনশিল্পীরাও কিভাবে এর থেকে সহায়তা পায়, সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি।