সাধারণ মানুষের কাছে রেল হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আরামদায়ক বাহন। সেইসঙ্গে নিরাপদও বটে। কারণ ট্রেন দুর্ঘটনা কম হয়।
কিন্তু অন্য এক দিক দিয়ে বাংলাদেশে ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে ট্রেন ভ্রমণ। চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছুড়ে মারছে একদল দুর্বৃত্ত। সেইসব ঢিলে ভাঙছে জানালার কাঁচ। কখনও সেই ঢিল এসে লাগছে যাত্রীদের চোখেমুখে।
শিশুসহ যাত্রীদের প্রাণও গেছে ঢিলের আঘাতে। বিগত এক বছর ধরে দেশের কোথাও না কোথাও প্রতিদিন ঘটছে এই ঘটনা।
সরকার রেল আধুনিকীকরণের জন্য নানারকম উদ্যোগ নিয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে ব্র্যান্ড নিউ সব কোচ। ঝকঝকে কোচগুলো ট্র্যাকে নামতেই দুর্বৃত্তদের ঢিলের শিকার হচ্ছে।
সোশ্যাল সাইটের কল্যাণে রেলওয়ের গ্রুপগুলোতে প্রতিদিনই সচিত্র অভিযোগ আসছে। রেলের অ্যাপেও আসছে একইরকম অভিযোগ। এসি কোচের যাত্রীরা তুলনামূলক নিরাপদ হলেও ননএসির যাত্রীরা জানালা খোলা থাকায় ভয়াবহ বিপদে।
অনেক যাত্রীর নাক-মুখ ফেটে গেছে ঢিলের আঘাতে। চোখে গিয়ে লেগেছে ঢিল!
ঢাকা-টঙ্গী সেকশনের ক্যান্টনমেন্ট থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। টঙ্গীতে প্রতিদিন প্রায় প্রতিটি ট্রেনে ঢিল ছোড়া হচ্ছে। এছাড়া নরসিংদী, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব, ময়মনসিংহ-জামালপুর সেকশন, তেজগাঁও, পূবাইল, ঈশ্বরদী ইত্যাদি জায়গার কথা উঠে এসেছে।
রেলওয়ের পক্ষ থেকে সচেতনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন তদন্তের। কারণ শুধু শিশু-কিশোররাই যে খেলার ছলে ট্রেনে ঢিল ছুড়ছে তা নয়; বেশ কিছু প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিরা ঢিল ছুড়তে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে।
ঢিল ছোড়ার ঘটনা রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষগুলো কোন উদ্দেশ্য সাধনে ট্রেনে ঢিল ছুড়ে মারছে, তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে দায়ী ব্যক্তিদের ধরে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ট্রেনের জানালায় নেট লাগিয়ে দিয়ে খুব সহজেই এই ঢিলের আঘাত থেকে যাত্রীদের রক্ষা করা সম্ভব। নাহলে আরও মানুষ আহত হবে ঢিলের আঘাতে।
আরও মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারাবে, এমনকী ট্রেনের সিটে বসে হারিয়ে যাবে আরও প্রাণ।