ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ১৮০ থেকে ২০০ মিটার। মস্কোর দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে রামেনকি ডিসট্রিক্ট। এই এলাকায় মাটির তলায় নাকি রয়েছে আস্ত এক শহর।
সরকারি ভাবে এর অস্তিত্ব স্বীকার করা না হলেও রহস্যময় এই শহরকে মস্কোর সব থেকে বড় বাঙ্কার বলা হয়। আমেরিকা ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধ চলার সময় ১৯৯২ নাগাদ প্রথম এই বাঙ্কারের খবর জানা গিয়েছিল। `কেজিবি অফিসার’নামে এক সাংবাদিকের প্রতিবেদনে প্রথম বারের জন্য সামনে আসে বিষয়টি।
মস্কোর উপর পারমাণবিক আক্রমণ এলেও নাকি নিরাপদে থাকা যাবে এই বাঙ্কারে। যুদ্ধের সময় নিরাপদ স্থানের কথা ভেবেই নাকি তৈরি করা হয়েছে এই বাঙ্কার। মাটির তলায় মানুষের থাকার জন্য যে নাগরিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে, তার সবই প্রস্তুত এখানে। মনে করা হয়, এখানে ১৫ হাজার লোকের থাকা সম্ভব।
মস্কোর মেট্রো যে ভাবে ছড়িয়ে রয়েছে শহরের বুকে, সে ভাবেই নাকি মাটির তলার ছড়িয়ে রয়েছে এই বাঙ্কার। ১৯৬০ সালের পর এই বাঙ্কার তৈরির কাজ শুরু হয়। ১৯৭০-এর মাঝামাঝি সময়ে এর কাজ শেষ হয়েছিল। রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি-র তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা হয়েছিল এই বাঙ্কার।
যদিও এই বাঙ্কারের কথা সরকারি ভাবে কখনই সামনে আনা হয়নি। ১৯৯১-এ মার্কিন সেনাবাহিনীর তরফে এই বাঙ্কারের বিষয়ে জানানো হয়। এটি ‘মেট্রো-২’ নামেও পরিচিত। এর একটি ম্যাপও প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। তার আগে কেজিবি-র এক অফিসার অলেগ গর্ডিভেস্কি ১৯৮৫-তে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সে দিন তাঁর কথায় এই বাঙ্কারের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছিল। কেজিবি-র গোপন কাজ সম্পর্কে আপনারা এখনও কিছুই জানেন না। মাটির তলায় একটা আস্ত শহর, সেখানে যোগাযোগের সমস্ত সুযোগ সুবিধার বন্দোবস্ত রয়েছে।’ তবে কোন জায়গায় রয়েছে সেই শহর, সে ব্যাপারে ওই সাক্ষাৎকারে কিছু বলেননি গর্ডিভেস্কি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর রিপোর্ট কার্ডেও উঠে এসেছিল এই সুড়ঙ্গ প্রসঙ্গ। সেখানে বলা হয়েছিল, মস্কো শহর ও শহরতলি এলাকায় সাবেক সোভিয়েত মাটির তলায় গভীর সুড়ঙ্গ বানিয়ে রেখেছে। নিরাপত্তার প্রয়োজনে যেটি কাজে আসতে পারে।