যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট পাঁচ বছরে ১৯৫ কোটি টাকা পাচার করেছেন সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায়।
অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুসন্ধানে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। তাঁর বিরুদ্ধে গতকাল রবিবার রমনা থানায় মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামালা করা হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন সম্রাট। আয়ের উৎস গোপন করার অভিপ্রায়ে এনামুল হক আরমানের সহায়তায় তিনি সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় আনুমানিক ১৯৫ কোটি টাকা পাচার করেছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে।
মামলায় আরো বলা হয়, সম্রাট রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইল এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন।
বাংলাদেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের শুরু থেকেই আলোচিত সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর অফিসে অভিযান চালায় র্যাব। সেখানে অবৈধভাবে ক্যাঙ্গারুর চামড়া রাখার অভিযোগে হওয়া মামলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠান।
ওই মামলায় তাঁর সাজা খাটা শেষ হয়েছে। তবে অন্য মামলায় তিনি আটক রয়েছেন।
সিআইডি জানায়, সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় অস্ত্র আইনে একটি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলা রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত ৩৫ বার সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন সম্রাট, মালয়েশিয়া গিয়েছেন তিনবার, দুবাইতে দুইবার এবং হংকংয়ে একবার।
ক্যাসিনোকাণ্ডে নাম আসার পর গত বছর ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা সম্রাট ও তাঁর সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এরপর তাঁর বিরুদ্ধে দুদকও তদন্ত করে। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। উত্তরা, ধানমণ্ডি, গুলশানসহ বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে সম্পদ রয়েছে তাঁর।
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অবৈধ মাদক ব্যবসাসহ নানা অবৈধ উপায়ে এসব সম্পদ গড়েছেন তিনি।