হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন, শুভ মহালয়া আজ। এ দিন থেকেই শুরু দেবীপক্ষের।
শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই চণ্ডী’তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া।
এই বছরের পুজো অন্যান্য বছরের মত নয়। করোনা আতঙ্কের আবহেই এবার দেবীপক্ষের সূচণা হলো। আর মহামারির দুর্যোগ মাথায় নিয়েই এবার হবে মাতৃ বন্দনা।
পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এ দিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার।
আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয় । মহালয়া থেকে দুর্গাপূজার আগমন ধ্বনি শুনতে পাওয়া গেলেও এবার ৬ দিন পরে পুজা অনুষ্ঠিত হবেনা।
আশ্বিণ মাস মল (মলিন) মাস হওয়ার কারণে এবার দূর্গাপুজা শুরু হবে প্রায় একমাস পর ২১ অক্টোবর বুধবার থেকে।
আজ ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি।
দেশের অন্যান্য মন্দিরেও এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার জানিয়েছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তদের নিরাপদে মহালয়া উপভোগ করতে আগামী কাল সকাল ৬ হতে ৭ পর্যন্ত চ্যানেল ২৪ এ সরাসরি সম্পচারিত হবে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এর মহালয়া অনুষ্ঠান।
দেবী দুর্গার আগমনী উপলক্ষে দিনটি উদ্যাপন করতে ভোর সাড়ে পাঁচটায় বনানী মাঠে দেবীবরণের আয়োজন করেছে গুলশান-বনানী সর্বজনীন পূজা পরিষদ।
মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দূর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোন মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না।
ফলত অসীম হ্মমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতারিত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়।
মহালয়ার আর একটি দিক হচ্ছে এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপূরুষের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন।
সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয় তাকে মহালয়া বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া। পিতৃপক্ষেরও শেষদিন এটি।