পুলিশ কর্মকর্তারাও এখন থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) -এ দায়িত্ব পালন করবেন। তারা থাকবেন মূলত জব্দ তালিকা তৈরি ও মামলা প্রস্তুতির দায়িত্বে।
বর্তমানে পুলিশের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সীমান্ত অপরাধে গ্রেপ্তার ও পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে। বিজিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, এই কাজগুলোতে পুলিশ বাহিনী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হলে আরও ভাল ফল পাওয়া সম্ভব বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকার সম্প্রতি এই আধা-সামরিক বাহিনীর জন্য ৪,২৮২ জন অতিরিক্ত জনবল অনুমোদন করেছে এবং তাদের মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক থাকবেন ৬৭ জন।
বিজিবির ডিরেক্টর অপারেশনস লেঃ কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “২০১০ সালে পুনর্গঠিত আধা-সামরিক বাহিনীর অর্গানোগ্রামে বিজিবিতে ডেপুটেশনে পুলিশ পরিদর্শকদের নিয়োগের বিধান রয়েছে।”
পুলিশ সদর দপ্তর গত বছর ১৮ ডিসেম্বর একটি চিঠি দিয়ে বিভিন্ন ইউনিট থেকে বিজিবিতে প্রষণে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী পুলিশ পরিদর্শকদের একটি তালিকা চেয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ৫৩ বছরের বেশি বয়সী এবং একাধিক বিভাগীয় শাস্তি প্রাপ্তদের নাম দেওয়া যাবে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরের ডেপুটি কমিশনার আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, তারা ডিএমপি থেকে ১০ জন পরিদর্শক পাঠাবেন।
বাকি পুলিশ পরিদর্শকদের অন্যান্য ইউনিট থেকে পাঠানো হবে।
সরকারি ডেপুটেশন নীতি অনুসারে সাধারণত একজন কর্মকর্তাকে তিন বছরের জন্য ডেপুটেশনে পাঠানো হয়।
লেঃ কর্নেল মহিউদ্দিন জানান, ৫৯টি বিজিবি ব্যাটালিয়নের প্রতিটিতে একজন করে পুলিশ পরিদর্শক থাকবেন। তিনি জব্দ তালিকা ও মামলা প্রস্তুত করবেন। সেই সঙ্গে তারা বিজিবি সদস্যদের এই কাজের প্রশিক্ষণ দেবেন।
বাকি আট পুলিশ পরিদর্শকের পোস্টিং কোথায় হবে সে সম্পর্কে তিনি কোনও তথ্য দেননি।
তিনি আরও যোগ করেন, “আদালতে বিচারের সময় প্রয়োজনে পুলিশ পরিদর্শকরা অভিযোগকারী হিসাবে যাবেন বা অভিযোগকারী হিসেবে থাকা বিজিবি সদস্যদের মধ্যে যাদের অভিজ্ঞতার অভাব আছে তাদের সহায়তা করবেন।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের পদবী এখানেও পরিদর্শকই থাকবে।
বিজিবিকে বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সীমান্ত রক্ষা, মাদক ও অবৈধ পণ্য পাচার রোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার ও আন্তঃসীমান্ত অপরাধ রোধ এবং প্রয়োজনে দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা নিশ্চিতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালে জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিজিবি ২২ হাজার ১৬৩ টি মামলা করেছে এবং ২,৮৫১ জনকে মাদক, স্বর্ণ, মানব পাচার ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে।
বিজিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, তাদের অনেক সহকর্মীর সঠিকভাবে আইনি পদ্ধতি অনুসরণের পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব আছে। মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে তারা সমস্যার মুখোমুখি হন এবং সাধারণত সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর সহায়তা নিয়ে থাকেন।
আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও তাদের অনেক ক্ষেত্রেই আদালতে অভিযোগকারী হিসাবে উপস্থিত থাকতে হয়।