ছাত্রলীগ-যুবলীগের ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় তাদের বিরুদ্ধে কমিটি গঠন করতে হবে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের হাত থেকে মা-বোনদের বাঁচানোর জন্য সবাইকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
অন্যের ঈশারায় আজকে আওয়ামী লীগ স্বাধীন দেশকে দখল করে অনাচার করছে, লুটপাট করছে, নারীর সম্ভ্রমহানি করছে। তাই জনগণের রক্ত ছাড়া জনগণের ব্যারিকেড ছাড়া মানুষের মুক্তি নেই।
রবিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ধর্ষণবিরোধী এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মানুষের পাশে কেউ নেই, একমাত্র আওয়ামী লীগ আছে’- সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, হ্যাঁ আওয়ামী লীগ তো মানুষের পাশে আছেই- ওই যে মানুষের জন্য করোনায় যে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে সেই ত্রাণ আত্মসাতের জন্য।
সেই ত্রাণ পাওয়া যায় আওয়ামী লীগ নেতার খাটের নিচে, মাটির ভেতরে। এ কারণেই আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে আছে।
তিনি বলেন, নারী নির্যাতন করার জন্য গত পরশুদিন ঢাকায় ছাত্রলীগের মহানগরের সহসভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এত ঘটনার পরও গতকাল আবারও সিলেটে আরেকটি নারীকে লাঞ্ছনা করা হয়েছে।
কে করেছে, ছাত্রলীগের নেতা করেছে। তার মানে, নারী নিপীড়ন-ধর্ষণে তারা অতীতের চেয়েও এখন আরো বেশি উদ্বুদ্ধ, অনুপ্রাণিত। তারা জানে যে, সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় আছে, সুতরাং নারীর ওপর নির্যাতন করা নারীর সম্ভ্রমহানি করা নিজেদের অধিকার মনে করছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ।
ওরা দেশ থেকে টাকা পাচার করাটাও নিজেদের অধিকার মনে করছে।
স্বাধীন দেশের মা-বোনেরা আজ নিরাপদ নয় কেন? এটার জন্য প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠন রাস্তায় নেমেছে, কী ভয়ঙ্কর আতঙ্ক সৃষ্টিকারী এসব ঘটনা। আর সরকার চেষ্টা করছে একটি ঘটনাকে আরেকটি ঘটনা দিয়ে আড়াল করার।
তনুকে সম্ভ্রমহানি করার পর হত্যা করা হয়েছিল, সেটিকে আড়াল করা হয়েছিল মিতুর ঘটনা দিয়ে, মিতুর ঘটনাকে আড়াল করা হয়েছিল ত্বকীকে হত্যার মধ্য দিয়ে আর ত্বকী হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের মধ্য দিয়ে। একটার পর একটা ঘটনা ঘটলেও সরকারের টনক নড়েনি।
মানুষের দুঃখ-দুর্দশা করোনায় মানুষের আক্রান্ত হওয়া কোনো স্বাস্থ্যসেবা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ হাহাকার করছে, ঢাকা শহরেই ৬৮ শতাংশ মানুষ কর্মহীন। মানুষের কর্ম নাই।
এর সব অবদান শেখ হাসিনার। আর তিনি বলেন কিনা আওয়ামী লীগ আছে মানুষের পাশে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে আছে ঠিকই; কিন্তু এই থাকাটা ত্রাণ আত্মসাতের জন্য, লুটপাটের জন্য। মানুষকে প্রকৃত সেবা দেওয়ার জন্য মানুষের পাশে নেই আওয়ামী লীগ।
মানববন্ধনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।