শাসকদের প্রশ্রয় ও বিচারহীনতার ফলে সারা দেশে ধর্ষকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নেতৃবৃন্দ।
তারা ধর্ষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এই আহ্বান জানান তারা।
বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় বর্ধিত পাঠচক্র ফোরামের সদস্য নিখিল দাস, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহবান হাবিব বুলবুল, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল কাদেরী জয়, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম নগর কমিটির সদস্য রোখসানা আফরোজ আশা ও বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য সচিব জুলফিকার আলী।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান নারী ও শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি ঘটনার বিভৎসতাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে আরেকটি ঘটনা। দেশের প্রায় প্রতিটি নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত অথবা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সংগঠিত হচ্ছে।
নারীর উপর সহিংসতা ও ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজীর খুব একটা নেই। ফলে বিচারহীনতার বিষয়টি এখন সমাজে গেড়ে বসেছে।
বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে দেশব্যাপী ধর্ষণ-নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সকল ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে ধর্ষককের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত; বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা দূর; বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ধর্ষণের তদন্ত; বিচারের রায় দ্রুত বাস্তবায়ন; ধর্ষিতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত; মামলার শুনানীকালে জেরার নামে ধর্ষিতাকে পুনরায় নির্যাতন বন্ধ; ধর্ষণের প্রমাণের জন্য ডিএনএ টেস্ট ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার; বিজ্ঞাপনে, নাটকে, সিনেমায় নারী দেহের প্রদর্শন বন্ধ; ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে নারীর প্রতি কটুক্তি ও অশ্লীল মন্তব্য নিষিদ্ধ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে আইন প্রণয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।