মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য যে এমন একটি নির্বাচন কমিশন আছে। লজ্জা-শরম বলতে কিছু নাই।
ঢাকা শহরের পাশে ১০ শতাংশ ভোটও না, আমরা মনে করি ৫ শতাংশও পড়েনি। বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। একটা মানুষের লজ্জা-শরম থাকে, এদের তা-ও নাই।
সোমবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি নির্বাচনে গেছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, কথাটা তো মিথ্যা বলেননি।
নির্বাচন তো প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে ২০১৪ সাল থেকেই। আপনারা ক্ষমতায় আসার পর সুপরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষ যাতে পছন্দের মানুষকে ভোট দিতে না পারে সে ব্যবস্থা করেছেন।
১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে ক্ষমতায় গেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছেন, পুলিশকে ব্যবহার করেছেন। মিডিয়াকে ব্যবহার করেছেন।
এই সরকারের অধীনে দেশ নিরাপদ নয়, দেশের মানুষ নিরাপদ নয় জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, মা-বোনেরা এখন নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে না।
বিনা বিচারে হত্যা, এখানে তাদের মতের সঙ্গে যারা একমত নয়, তাদের গুম করে নেয় অথবা হত্যা করা হয়। যে পুলিশ মানুষের নিরাপত্তা দেবে, সেই পুলিশ কক্সবাজারে সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে।
সেখানের ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে ৩৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। মানুষ কোথায় যাবে। যাদের দায়িত্ব জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া, তাদের দ্বারাই হত্যাকাণ্ড হচ্ছে।
আমি আজ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই- পদত্যাগ করুন, অতীতের সব নির্বাচন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
এটাই একমাত্র সমাধান। কভিড বলেন আর যা-ই বলেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না।
যুব-তরুণ ছাত্র সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা শপথ গ্রহণ করি। এ দেশের জনগণের অধিকার ভোটের অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। আজকে কেউ কথা বলতে পারবে না, কেউ লিখতে পারবে না।
সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারবে না। এর চেয়ে বড় নির্যাতন, নিপীড়ন ও স্বাধীনতা হরণ আর কী থাকতে পারে। এরা এখন সম্পূর্ণভাবে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারে পরিণত হয়েছে। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
ভিন্ন কথা বললেই মামলা। বাড়ির নারীরাও বাদ যায় না, তাদেরও মামলার শিকার হতে হয়। আমি সব দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে আহ্বান জানাই, আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট একদলীয় সরকারকে সরিয়ে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহতাব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি ইউনুস মৃধা, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান, শামসুল হক শামসু, মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম নকি, কৃষকদল নেতা হাসান জাফির তুহিন, তাঁতীদল নেতা কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।