এক সপ্তাহ আগে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া গলায় গামছা পেঁচানো ও পায়ের রগ কাটা লাশটি ছিল নবী হোসেন নামের এক ব্যক্তির। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের পুরানচর এলাকার বাসিন্দা। প্রতিবেশী এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। আর সেটি মেনে নিতে পারেনি ওই প্রবাসীর ছেলে সাব্বির। সাব্বির ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করায় নবী হোসেনকে। এ ঘটনায় আশিক ও সুমন নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রবিবার দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, পিবিআই স্ব-প্রণোদিত হয়ে নবী হোসেন হত্যা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে। আমরা প্রযুক্তির সাহায্যে কিশোরগঞ্জ থেকে সুমন ও নরসিংদী থেকে আশিককে গ্রেফতার করি। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার উদ্ধার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশিক ও সুমন এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, মূলত পরকীয়ার বলি হলেন নবী হোসেন। খুন হওয়ার আগে তিনি তার প্রতিবেশী প্রবাসী এক ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। আর সেটি মেনে নিতে পারেননি প্রবাসীর ছেলে সাব্বির। সাব্বির ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে তুষার নামের এক ভাড়াটে খুনিকে দিয়ে দুইদিনের প্রচেষ্টায় নবী হোসেনকে খুন করায়। খুনের দুই দিন আগে তারা নবী হোসনকে মাইক্রোতে তুলতে চেয়ে ব্যর্থ হন। অবশেষে ১৭ অক্টোবর ভৈরব থেকে নবী হোসেনকে অপহরণ করে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসার পথে কুমিল্লায় মহাসড়কে মুখে গামছা বেঁধে গলা টিপে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য নবী হোসেনের পায়ের রগও কেটে দেয়া হয়। লাশটি গাড়িতে পায়ের নিচে রেখে দিয়ে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিখাইন এলাকায় ফেলে তারা কক্সবাজার বেড়াতে যান। কক্সবাজার বেড়িয়ে সবাই আত্মগোপনে চলে গেছেন। আমরা দু’জনকে আটক করেছি।
আটককৃতদের আদালতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে জানিয়ে এসপি নাজমুল হাসান বলেন, রবিবার আমরা আশিক ও সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলাম। আদালত তিনদিনের রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন। এই দুই জনের রিমান্ড চলবে। সাব্বির ও তুষারকে গ্রেফতারে আমাদের টিম কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিখাইন এলাকা রাস্তার পাশ থেকে নিহত নবী হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পটিয়া থানা পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর নবী হোসেনের ভাই চট্টগ্রামে লাশ শনাক্ত করেন এবং পটিয়া থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পিবিআই স্ব-প্রণোদিত হয়ে এই হত্যা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এক সপ্তাহের মাথায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেন।